প্রতিনিধি ১৩ জুন ২০২০ , ১২:৫০:৫২ অনলাইন সংস্করণ
ঠাকুরগাঁও থেকে মাহমুদ আহসান হাবিব॥ অবৈধ সম্পর্ক স্থাপনে ব্যর্থ হয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে মোবাইল চুরির অভিযোগ এনে দুই শিশুকে মধ্যযুগীয় কায়দায় হাত-পা বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি সদস্য ও তার ৬ সহযোগীর বিরুদ্ধে।
গত ২২ মে বর্বরোচিত এ ঘটনা ঘটলেও ভুুক্তভোগীদের থানায় মামলা না করার হুমকি দেয় অপরাধীরা। নানা সমস্যার মাঝেও গত ৫ জুন থানায় মামলা হলেও এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়নি আসামীরা। তবে দোষীদের শাস্তি দিতে নির্যাতিত ও ভুক্তভোগী পরিবারের কাছে প্রতিশ্যুতি দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
জানাযায়, পীরগঞ্জ উপজেলার দেওধা গ্রামের এক গৃহবধূর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপনের প্রস্তাব দেয় ওই এলাকার মোতালেব আলী নামে এক ব্যক্তি। এতে ওই গৃহবধূ রাজি না দেওয়ায় এর ক্ষোভ মিটাতে ওই গৃহবধূর শিশু সন্তান সুমন (১৫) ও ভাতিজা কমিরুলের (১৭) বিরুদ্ধে মোবাইল চুরির অভিযোগ তুলে গত ২২ মে সেনগাঁও ইউনিয়নের ৪ নম্বর ইউপি সদস্য জহিরুল ইসলামের নেতৃত্বে এক সালিশ বৈঠক বসানো হয়।
সেখানে ওই দুই শিশুকে রশি দিয়ে হাত-পা বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালিয়ে সেই নির্যাতনের ভিডিও করে রাখে। পরে সেই নির্যাতনের ভিডিও চিত্র দেখিয়ে ওই গৃহবধূর কাছে ৫০ হাজার টাকাও দাবি করা হয়। না পেয়ে পরবর্তীতে গৃহবধূকে মারপিট করে তার বাড়ি থেকে একটি গরু তুলে নিয়ে যায় নির্যাতনকারীরা এবং থানায় মামলা না করতে নানা ধরনের হুমকি দিয়ে আসে তারা।৫ জুন থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী ওই গৃহবধু। এর পর থেকে ইউপি সদস্য জহিরুল ইসলাম সহ অন্যান্য আসামীরা পলাতক রয়েছে।
নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ বলেন, ঘটনার পর থেকে ইউপি সদস্য ও তার সহযোগীরা আমাকে ও আমার সন্তানদের একঘরে করে রেখেছিল। হাসপাতালেও যেতে দেয়নি। পরে লুকিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে আমরা পীরগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি হই। ইউপি সদস্য ও তার সহযোগীরা মিলে আমার ছেলে ও ভাতিজাকে হাত-পা বেঁধে অমানবিGক নির্যাতন করেছে। তারা আমাকে নানা কুপ্রস্তাব দেয়। আমি তাদের কঠোর শাস্তি চাই।
পীরগঞ্জ থানার ওসি প্রদীপ কুমার রায় জানান, ঘটনার তদন্ত চলছে এবং আসামিদের গ্রেপ্তারেরও চেষ্টা চলছে।
এদিকে গত শুক্রবার রাত থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ঘটনার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজন্ ছড়িয়ে পরে পুরো জেলায়। শনিবার নির্যাতনের শিকার ওই দুই শিশু ও ভুক্তভোগী গৃহবধুর সাথে কথা বলতে পীরগঞ্জের দেওধা গ্রামে যান জেলা প্রশাসক ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিম। তিনি নির্যাতিত পরিবারের সকলের সাথে কথা বলে নগদ অর্থ তুলে দেন এবং দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার জন্য পীরগঞ্জ এর ইউএনও রেজাউল করিমকে নির্দেশ দেন।