প্রতিনিধি ১২ জুন ২০২০ , ৮:২৬:৫৫ অনলাইন সংস্করণ
শাল্লা প্রতিনিধি:: চলমান করোনা পরিস্থিতি ও সারা দেশজুড়ে লকডাউনে শ্রমজীবীসহ নিম্ন আয়ের মানুষের এমনিতেই চুলো জ্বলছে না। এর ওপর বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) থেকে নেওয়া ঋণের কিস্তি শোধের চাপে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তাঁরা।
এনজিওকর্মীরা বাড়িতে গিয়ে কিস্তি শোধের চাপ দেওয়ায় ভয়ে পালিয়ে ফিরছেন অনেক অভাবী মানুষ।
শাল্লা উপজেলায় এনজিও কর্মীদের কিস্তির চাপ দিন দিন বেড়েই চলছে। এর মধ্যে শাল্লা উপজেলায় আশা ও ব্র্যাকের কর্মীরা কিস্তির জন্য বেশি চাপ প্রয়োগ করছে বলে ঋনগ্রহীতাদের অভিযোগ।
দেশের এই পরিস্থিতিতে জীবন মরণের খেলা চলছে। আর এনজিও কর্মীরা কিস্তির জন্য সদস্যদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাপ প্রয়োগ করছে। দেশজুড়ে প্রথম লকডাউনের শুরু থেকেই পরিবহনশ্রমিক, বাসস্ট্যান্ড-নৌঘাটশ্রমিক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা প্রায় দুই মাস বেকার হয়ে রয়েছেন। এ ছাড়া হাটবাজার ও কারখানার শ্রমিকেরাও এখন প্রায় উপার্জনহীন।
এসব নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষের বেশির ভাগই ঘর তৈরি, মেয়ের বিয়েসহ বিভিন্ন কারণে এনজিও থেকে ঋণ নিয়েছিলেন। তাঁরা দশ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ নিয়ে সাপ্তাহিক কিস্তিতে তা শোধ করে আসছিলেন। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারনে লকডাউনের শুরু থেকেই আয় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কিস্তি শোধের উপায়ও বন্ধ হয়ে গেছে তাঁদের।
এনজিওকর্মীরা ঋণগ্রহীতাদের বাড়িতে গিয়ে কিস্তি শোধের জন্য চাপ দিচ্ছেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে গালাগাল দিচ্ছেন। এ অবস্থায় অনেক ঋণগ্রহীতা এনজিওকর্মী ও সমিতির লোকজনের ভয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে থাকছেন।
শাল্লা উপজেলা সদরের সুপন দাস বলেন, ‘চাইল কেনার চিন্তার চাইতে এহন কিস্তি শোধের চিন্তা বেশি হয়া দাঁড়াইছে। আশা এনজিও থ্যাইকা লোন নিয়্যা এখন কিস্তি শোধ করব্যার পারত্যাছি না। কিস্তির অফিসাররা কিস্তি নেওয়ার জন্নে বাড়িত আইস্যা বইস্যা থাকে। এমনকি মোবাইলে ফোনেও কিস্তির জন্য চাপ দিচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শাল্লা উপজেলায় গ্রামীণ ব্যাংক, আশা, টিএমএসএস, ব্র্যাকসহ আরও কয়েকটি এনজিও ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। মূলত দিনমজুর, শ্রমিকসহ নিম্ন আয়ের মানুষই এসব এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে সাপ্তাহিক কিস্তিতে তা শোধ করে থাকেন। উপার্জনের পথ বন্ধ হলে কিস্তি শোধের উপায় থাকে না এসব মানুষের।
দুই-তিনটি এনজিওর মাঠপর্যায়ের কর্মীর সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলতে চাইলে পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে তাঁরা জানান, ঋণ বিতরণ করার পর তা উত্তোলনের দায়দায়িত্ব সম্পূর্ণ তাঁদের। কেউ কিস্তি শোধ না করলে সে জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে তাঁদের কঠোর জবাবদিহিতে পড়তে হয়। কখনো কখনো নিজের পকেট থেকে কিস্তি শোধ করতে হয়, নয়তো শাস্তিমূলক পদক্ষেপের সম্মুখীন হতে হয়।