• করোনা ভাইরাস নিউজ

    তাহিরপুর হাওর ও সীমান্ত এলাকায় অনেকেই জানেনা করোনা ভাইরাস কি!

      প্রতিনিধি ২৬ মে ২০২০ , ৫:০৮:৫১ অনলাইন সংস্করণ

    তাহিরপুর প্রতিনিধি:: বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ তথা গোটা বিশ্বে মহামারী এক আতঙ্কের নাম করোনা ভাইরাস। প্রাণঘাতী মহামারী করোনাভাইরাস সংক্রামিত হয়ে প্রতিদিনওই সারাবিশ্বে সহস্রাধিক মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে। কিন্তু তার পারও সুনামগঞ্জ জেলার হাওর বেষ্টিত উপজেলা তাহিরপুরের হাওর ও সীমান্ত এলাকায় অনেকেই জানেনা করোনা ভাইরাস কি। ফলে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে সারা বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকেও এই মহামারী মোকাবেলায় সুনামগঞ্জ জেলা ও তাহিরপুর উপজেলাসহ বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় জেলায় নেওয়া হয়েছে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখার সতর্ক ব্যবস্থা, চলছে নানা প্রচার প্রচারণা আর অঘোষিত লকডাউনের ব্যবস্থা। কিন্তু এ জেলার সীমান্ত ও হাওর এলাকার মানুষের মাঝে পৌঁছায়নি সচেতনতার বার্তা। মানা হচ্ছে সামাজিক দুরত্ব। ফলে করোনা আতঙ্কে নয়! সীমান্ত ও হাওর এলাকার মানুষের দিন কাটছে আনন্দে। এর বাস্তবতার পুরোপুরি মিল চোখে পড়ে আজ ঈদের দ্বিতীয় দিন ২৬ মে মঙ্গলবার সকাল থেকেই। সকাল থেকে মোটরসাইকেল, অটো রিক্স ও ট্রলার যোগে সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার মেঘালয় সীমান্ত ঘেঁষে পর্যনট স্পষ্ট শিমুল বাগান, বারিক্কার টিলা(বারেক টিলা), সীমান্ত নদী যাদুকাটা আর ট্যাকেরঘাট শহীদ সিরাজ লেক( নীলাদ্রি লেকে) হাজার হাজার দর্শনার্থীদের উপস্থিতি আর আনাগোনা চোখে পড়ার মতো। ঈদের দিন দুপুর থেকে আজ দ্বিতীয় দিন বিকাল পর্যন্ত তাহিরপুর উপজেলার বিভিন্ন পর্যনট স্পষ্ট গুলোতে সামাজিক দুরত্ব নামে গাদাগাদি করে ও মুখে মাস্ক বিহীন হরহামেশাই ঘুরাঘুরি করতে দেখা গেছে নারী,পুরুষসহ, কিশোর-কিশোরী, ছেলে-মেয়ে ও আবাল- বৃদ্ধাদের। সরেজমিনে গিয়ে তাদের সাথে কথা বলে জানাযায়, তারা অনেকই জানেন না করোনাভাইরাস কি। যার ফলে জেলার তাহিরপুর উপজেলার জনসাধারণ রয়েছে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঝুঁকির মধ্যে। জানা যায়, বাংলাদেশের উত্তর পূর্ব ভারত সীমান্তবর্তী উপজেলা তাহিরপুর । জেলার তাহিরপুর উপজেলার ৭ টি ইউনিয়নে ৩ টি ইউনিয়নেই সীমান্ত ঘেঁষে আর বাকি ৪ ইউনিয়ন হাওর বেষ্টিত এলাকা। এসব এলাকায় রয়েছে অসংখ্য মানুষের বসবাস ও গণ বসতি। এদিকে স্বাস্থ্য বিভাগ ও জেলা পুলিশ থেকে জানা যায়, জেলায় মোট করোনাভাইরাসে আক্রান্তরোগীর সংখ্যা মোট ১০৮ জন । এর মধ্যে তাহিরপুর উপজেলায় করোনা আক্রান্ত ছিল ১৩ জন। ওই ১৩ জনের মধ্যে ৬ জন আইসোলেশনে থাকা ৬ জন সুস্থ্য হয়েছে। এবং বকি ৭ জন আইসোলেশনে।

    বর্তমান সময়ে শহরের মানুষ করোনা ভাইরাস সম্পর্কে কিছুটা জানলেও প্রত্যন্ত সীমান্তবর্তী ও হাওর এলাকার মানুষের মধ্যে নেই করোনা ভাইরাসের কোন ধারনা। তাদের জানায়, করোনাভাইরাস সম্পর্কে উপজেলার উল্লেখ্য যোগ্য স্থান গুলো ছাড়া স্বাস্থ্য বিভাগ, প্রশাসন কিংবা কোন প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সীমান্ত কিংবা হাওর এলাকায় চালানো হয়নি সচেতনতামুলক তেমন কোন কার্যক্রম। যার ফলে লকডাউনের মধ্যেও হাটে বাজারে, দোকান-পাটে হরহামেশাই মানুষের চলাচলের কারণে তাদের ও পরিবারের সদস্যদের ছড়িয়ে পড়তে পারে এই করোনা ভাইরাস। অন্য দিকে সীমান্তের বিভিন্ন এলাকায় কাটা তারের বেড়া না থাকায় এপারে নো-ম্যানস ল্যান্ডে ভারতীয়রা তাদের জমি চাষাবাদ করতে আসার সুযোগে সীমান্তের এ মানুষের সাথে তৈরি হচ্ছে তাদের সক্ষতা, যা করোনার ঝুঁকি আরও বাড়াচ্ছে। এ নিয়ে আতঙ্কিত সচেতন মহল।
    তাহিরপুর সীমান্তের উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের সীমান্ত ঘেঁষে গ্রামের উপজাতি সুমন চাংমা, ব্রাইন ডিব্রাসহ হয়রত আলী কেরামত মিয়াসহ অনেকেই বলেন, আমরা জানিনা করোনা ভাইরাস কি, কিভাবে তা ছড়িয়ে পড়ে। সচেতনতামুলক কার্যক্রম না চালালে ও না জানালে বুঝবো কি করে এ ভাইরাসে কি ক্ষতি হয়। সবার উচিত আমাদের জানানো, কি ভাবে কি করতে হবে। এখানে করোনা ভাইরাস সম্পর্কে সচেতন মূলক কিছুই নেই। তবে আমরা টিভিতে অনেক কিছু শুনছি। কিন্তু আমরা চাই আমাদের এলাকার জন্য করোনা ভাইরাস সম্পর্কে আমাদের জানালে আমারা সচেতন হতে পারি সরকার যেন এমন একটা উদ্যোগ নেই। তা না হলে আমরা জানবো কিভাবে করোনা ভাইরাস এর ক্ষতি কি হয়। এজন্য যদি আমাদের জনসচেতনতামূলক কোন বার্তা না দেয় তাহলে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাব। তাহিরপুর উপজেলার সীমান্ত ঘেঁষা বড়দল ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আবুল কাশেম বলেন, বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাস সারা বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে এতে অনেক লোক মারা গেছে, এবং করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। বাংলাদেশে এ রোগের প্রাদুর্ভাব ছিল না। তবে বাংলাদেশিরা যারা বাইরে থেকে এসেছে তাদের মধ্যে অনেকেরই করোনা ধরা পড়েছে যার প্রেক্ষিতে আমরা শঙ্কিত। তাই সীমান্তের বাসিন্দাদের এখনই যদি সচেতন করা না যায় তাহলে তাদের বড় অংশ সংক্রমিত হতে পারে এই ভাইরাসে। বিশেষ করে বাংলাদেশে যেহেতু ভারতের সঙ্গে একটা বড় এরিয়া সীমান্ত রয়েছে এবং ভারতেও অনেকেই এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে এবং অনেকেই আক্রান্ত। সীমান্ত এলাকার অবেক বাংলাদেশীর নাগরিকের সাথে ভারতের অনেকা নাগরিকদের একটা যোগাযোগ থাকে। আর যেহেতু পাশাপাশি জমিতে চাষ করে সেখান থেকেও তাদের নিকটদুরত্বের কারণে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার একটা সম্ভাবনা রয়েছে। এ কারণে আমি মনে করি সীমান্ত এলাকার দিকে আমাদের সবাইকে বেশী দৃষ্টি দেওয়া দরকার। আমাদের বর্ডার বেল্টের যে মানুষগুলো আছে তাদেরকে করোনা ভাইরাস নিয়ে আরও সচেতন করতে হবে। আমারই উনিয়নের ও পুলিশের পক্ষ থেকে সীমান্ত এলাকায় সবসময়ই প্রাচার প্রচারণাচালিয়ে যাচ্ছি। তবে আমার ইউনিয়নের বারিক্কাটিলা বেশি করোনা ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ এই এলাকা দিয়ে বাংলাদেশের মানুষ বিভিন্ন বাংলাদেশী পণ্য নিয়ে হরহামেশাই ভারতে যাচ্ছে। এবং ভারতের মানুষ ভারতীয় বিভিন্ন পণ্য নিয়ে বাংলাদেশে আসছে। তাই বারিক্কারটিলাসহ আশপাশে এলাকার মানুষ গুলোর করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকির মধ্যে আছে।

    আরও খবর

    Sponsered content