প্রতিনিধি ১৬ মে ২০২০ , ৭:৩১:১৭ অনলাইন সংস্করণ
ফারজানা মৃদুলা
দিন যতই যাচ্ছে ততই নোবেল করোনা ভাইরাসের ভয়াবহতা তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। করোনা ভাইরাস সাম্প্রতিক সময়ে সকলের আলোচনার মূখ্য বিষয়।
এখন পর্যন্ত এই ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে আনতে চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য প্রতিষেধক তৈরি করতে পারেনি। নিয়মিত হাত ধোয়া,স্যানিটাইজার ব্যবহার করা, আইসোলেশনে থাকা, ঘরের বাইরে না যাওয়া, জনসমাগম এড়িয়ে চলা।এইগুলোই বারবার মেনে চলতে বলা হচ্ছে।
বিশ্বজুড়ে চলছে ঘোষিত বা অঘোষিত লকডাউন। করোনা ভাইরাস মারাত্বক ছোঁয়াচে রোগ। দ্রুতই এই রোগ একজন থেকে আরেকজনে ছড়িয়ে পড়ে। করোনা ভাইরাসের উৎস ভূমি চীন থেকে শুরু করে ইতালি, স্পেন, জার্মান, আমেরিকা, যুক্তরাজ্য, ইরান, ইন্দোনেশিয়া, ভারত সর্বত্রই চলছে লকডাউন।
এই ভাইরাসটি ভয়াবহ গতি ছড়িয়ে পড়ছে লাগামহীন ঘোড়ার মত। এটি প্রতিরোধ করার জন্য প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি সাথেসাথে নিবিড় পর্যবেক্ষণ ও প্রতিরোধ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বর্তমানে। আমাদের ভাগ্যের নির্মম পরিহাস হয়ত আমাদের সাথে জড়িয়ে পড়ছে। সাধারণ সতর্কতা অবলম্বন
করে আমরা এই ভাইরাসটির সংক্রমণ ও বিস্তারের ঝুঁকি কমিয়ে আনতে পারি। আমরা এখনও হয়ত বা বুঝতে পারছি না আমাদের দেশে কি ধরনের ভয়ানক পরিস্থিতি হতে চলছে। আমরা এখন ও অসতর্ক।
উচ্চ তথ্যপ্রযুক্তি ও অর্থনৈতিক শক্তিশালী দেশগুলো ইতিমধ্যেই এই ভাইরাসের কাছে অসহায়ত্ব প্রকাশ করে হার মেনেছে।
আমাদের দেশে করোনা ভাইরাসের আক্রান্তের সংখ্যা কম দেখে কোনোভাবেই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলার সুযোগ নেই।
এই মহামারী সংক্রমণ ও তার ভয়াবহতা নিয়ে কথা আলাপ শুরু হয়েছে বেশ কিছু মাস আগে৷ কর্তৃপক্ষ বলেছিলেন, আমাদের সব প্রস্তুতি আছে৷
কিন্তু প্রতিনিয়ত বেড়েই চলছে আক্রান্তের সংখ্যা। এর পরও কি আমাদের কিছু বলার আছে?
এই মহামারী নিয়ে বাংলাদেশে প্রথম ঘোষণা আসে ৮ মার্চ। এক দিয়ে শুরু এরপর দিনে দুই থেকে তিন, সর্বোচ্চ ছয়। মাঝেমধ্যে মধ্যে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা আবার শূন্যের কোটায় ও ছিলো যা এক অলৌকিক ঘটনা বললে মন্দ হবে না।
কিন্তু এখন প্রতিদিনই দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমিত রোগী হাজারেরও বেশি শনাক্ত হচ্ছে এবং নতুন নতুন এলাকায় তা ছড়িয়ে পড়ছে প্রতিনিয়ত ।যা মাত্র কয়েকদিন আগেও আমারা কল্পনা করিনি!
নমুনা পরীক্ষার পরিমাণ বাড়ালে হয়ত
সংক্রমনের সংখ্যা কোথায় গিয়ে ঠেকবে
তা বলাবাহুল্য!
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায়গুলোর একটি হিসেবে বিশেষজ্ঞরা যে বিষযটির দিকে সবাইকেই খেয়াল রাখতে বলছেন, তাহলো সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, অর্থাৎ অন্যদের কাছ থেকে শারীরিকভাবে খানিকটা দূরে থাকা।
কিন্তু বাংলাদেশে লকডাউন শিথিল এবং মার্কেটসহ নানা ধরণের প্রতিষ্ঠান চালু করার ঘোষণা দেয়ার কারণে এই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাটা বেশ দূস্কর হয়ে পড়েছে।
কারণ বাস্তবতা হলো, মার্কেটে গিয়ে বা ভিড় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এমন জায়গায় গিয়ে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ অনুযায়ী এক মিটার দূরত্ব বজায় রাখা কোনকালেই সম্ভব নয়।
আমরা আসলেই হয়ত মৃত্যুর মিছিলের সাড়ি দেখতে নিজেরা ইচ্ছে করেই প্রস্তুতি নিচ্ছি।
বাস্তবতা যে কি তা টের পাবো খুব শীঘ্রই। কেননা আমরা অসহায়ত্ব কে ডেকে আনছি।
লেখকঃ কলামিস্ট