প্রতিনিধি ৪ মে ২০২০ , ২:৪২:৩৩ অনলাইন সংস্করণ
‘সার্স-কোভ-২’ (করোনাভাইরাস) একটি অদৃশ্য শত্রু। খালি চোখে দেখা য়ায় না। চীনের উহানের তৈরী নভেল করোনা ভাইরাস নিয়ে কথা। অনেকে মনে করেন বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী দেশটির প্রেসিডেন্ট খেই হারিয়ে ফেলছেন।নিজের ব্যর্থতা ঢাকার জন্য চীনকে দায়ী করছেন। করোনা নিয়ে বিশ্বে গুজব সবচেয়ে বেশি ছড়াচ্ছে।করোনার প্রাদুর্ভাবে বিশ্ব যখন বিপর্যস্ত তখন এ ভাইরাসকে ঘিরে গুজবও ছড়িয়েছে এক শ্রেনীর মানুষ। যা ডালপালা মেলে একসময় বড় বিপদের কারণ হয়ে উঠেছে। যুক্তি ও বিজ্ঞানকে ছাড়িয়ে নেট জগতে ভুল তথ্যের সমারোহ ঘটেছে।
মানুষের তৈরি, উহানের ল্যাব থেকে এসেছে: করোনা মানুষের তৈরি, এ গুজব ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠে।এ নিয়ে নোবেল বিজয়ী ২ জন বিজ্ঞানীরা মুখ খুলতে শুরু করেছেন।
জাপানের নোবেল পুরস্কার বিজয়ী বিজ্ঞানী অধ্যাপক তাসুকু হনজো মতে, নোভেল করোনাভাইরাস প্রাকৃতিক কিছু নয় এটা মানুষের হাতে তৈরি। তিনি দৃড় প্রত্যয়ী তার এ বক্তব্য কোনো না কোনো দিন সত্য প্রমাণিত হবে। যদি মিথ্যা প্রমাণিত হয় তাহলে তার নোবেল পুরস্কার প্রত্যাহার করে নেওয়া যাবে, এতে তার কোনো আপত্তি নেই। মিডিয়াতে সম্প্রতি দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই চাঞ্চল্যকর তথ্য তুলে ধরেন। প্রফেসর হনজো মতে, নোভেল করোনাভাইরাস যদি প্রকৃতি থেকে আসত তা হলে,সারা বিশ্ব একই সময়ে একইভাবে এই ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হতো না। কারণ,প্রকৃতির কথা বিবেচনা করলে একই সময়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের তাপমাত্রা একই রকম নয়। ভাইরাসটি যদি প্রাকৃতিকই হতো তা হলে চীনের উহানের তাপমাত্রার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ অঞ্চলগুলোতেই এই ভাইরাস প্রভাব বিস্তার করত। অথচ এই ভাইরাস সুইজারল্যান্ডের মতো দেশকে যেভাবে আক্রমণ করেছে, ঠিক একইভাবে মরু অঞ্চলের দেশগুলোতেও আক্রমণ করেছে। এটা যদি প্রাকৃতিকই হতো, তা হলে শুধু শীতপ্রধান অঞ্চলেই ছড়াত এবং উষ্ণ অঞ্চলগুলোতে যেয়ে এই ভাইরাসটি মরে যেত।
প্রফেসর হনজো বিভিন্ন প্রাণী এবং ভাইরাস নিয়ে ৪০ বছর ধরে কাজ করেচেন। কখনো ভাইরাসের এমন প্রকৃতি তিনি লক্ষ্য করিনি। তার মতে এটা প্রাকৃতিক নয়, এটা মানুষের তৈরি এবং সম্পূণরুপে আর্টিফিসিয়াল। হনজো আরও বলেন, ‘আমি চার বছর চীনের উহানের ল্যাবরেটরিতেই কাজ করেছি এবং ল্যাবরেটরির প্রতিটি স্টাফের সঙ্গেই আমার পরিচয় আছে। করোনা মহামারী ছড়িয়ে পড়ার পর আমি তাদের সঙ্গে ফোনে বার বার আলাপ-আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু গত তিন মাস ধরে ল্যাবরেটরির সবগুলো টেলিফোন লাইন বন্ধ পাচ্ছি। এতে আমি বুঝতে পারছি, ওই ল্যাবরেটরির কোনো টেকনিশিয়ানই আর জীবিত নেই।’
প্রফেসর হনজো বলেন, ‘এতকাল পর্যন্ত গবেষণা করে আমি যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি, তা থেকে এটা আমি শতভাগ নিশ্চিত করে বলতে পারি, করোনাভাইরাস প্রাকৃতিক কোনো বিষয় নয়। এটা বাদুড় থেকেও আসেনি। চীন এই ভাইরাসটি তৈরি করেছে।’ প্রফেসর হনজো পরিশেষে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, ‘আমি যে কথাটি আজ বলে দিলাম সেটা যদি মিথ্যা প্রমাণিত হয়, এমনকি আমার মৃত্যুর পরও যদি এ কথাটি মিথ্যা প্রমাণিত হয়,তা হলে সরকার যেন আমার নোবেল পুরস্কারটি প্রত্যাহার করে নেয়। আমি সেই অধিকার দিয়ে দিলাম। আমি আবারও বলছি, চীন মিথ্যা বলছে এবং এ কথা সত্যি যে একদিন প্রত্যেকের কাছে এটা প্রমাণিত হয়ে যাবে।’
ইতোপূর্বে ফ্রান্সের নোবেল জয়ী বিজ্ঞানী লুক মন্তানিয়ের এমনটি ইঙ্গিত দিয়ে বলেছিলেন, ‘উহানের ল্যাবরেটরি থেকেই নোভেল করোনাভাইরাসটি ছড়িয়েছে। তিনি বলেন,ওই ল্যাবরেটরিতে এইডস ভাইরাসের প্রতিষেধক তৈরির চেষ্টা করতে গিয়ে এটি ভুলবশত বাইরে ছড়িয়ে পড়েছে।’ গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে লুক মন্টানিয়ের বলেন, ‘উহানের ল্যাবরেটরিতে চলতি শতকের গোড়ার দিকে এইচ আইভির প্রতিষেধক নিয়ে গবেষণা চলছিল। সেখানে যারা কাজ করছিলেন, তারা এই ভাইরাসটির বিষয়ে বেশ অভিজ্ঞ ছিলেন। করোনাভাইরাসের কোষের মধ্যে এইচআইভির কিছু অংশের উপস্থিতিও পান তারা।’ উল্লেখ্য, এইডস ভাইরাস চিহ্নিত করার স্বীকৃতি হিসেবে ২০০৮ সালে নোবেল পুরস্কার পান মন্তানিয়ের।
দিনরাত এক করে গবেষণাগারে প্রতিষেধকের খোঁজ চালিয়ে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু তার জন্য আণুবীক্ষণিক শত্রুটিকে ভাল করে চিনতে পাছেন না। এখনও পর্যন্ত ভাইরাসটির ১১টি টাইপ বা ধরন সম্পর্কে জানা গেছে। ভাইরাসটি সম্পর্কে পুরোপুরি জানতে না-পারলে প্রতিষেধক তৈরি হলেও তা সবার শরীরে কাজ করবে না। তাই ভ্যাকসিন বা প্রতিষেধক তৈরি বেশ চ্যালেঞ্জিং এবং সময় সাপেক্ষে ব্যাপার।
করোনাভাইরাস প্রাকৃতিক নয়, এটা মানুষের তৈরি-তা নিয়ে বির্তক রয়েছে। এখনো বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত নয়।আগামীতে হয়তো বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত হবে করোনাভাইরাস প্রকৃতির খেয়ালীপনা,না মানুষের তৈরি।ততদিনে লাশের মিছিল কতদূর গড়ায় কে জানে?