প্রতিনিধি ২৪ এপ্রিল ২০২০ , ১০:০০:৫৫ অনলাইন সংস্করণ
কুলেন্দু শেখর দাস, সুনাামগঞ্জ।।
এবার নিজেই কাস্তে (কাঁচি) হাতে নিয়ে মধ্যরাতে হাওরে থাকা কৃষকের পাকা ধান কাটলেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ ও জেলা যুবলীগের আহবায়ক ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান খায়রুল হুদা চপল।
জানা গেছে,বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভারাস সংক্রমন রোধের পাশাপাশী আগাম বন্যা ধেয়ে আসার পুর্বেই দ্রæত ধান কেটে গোলায় তোলতে কৃষক ও ধাওয়ালী (ধান কাটা শ্রমিক)দের উৎসাহ দিতে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ রাতে নিজ হাতে কাস্তে নিয়ে ধান কাটতে হাওরে নামলেন।
বৃহম্পতিবার রাতে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সদর উপজেলার জলভাঙা হাওরের ধান কাটা অবস্থায় এ সময় উপস্থিত ছিলেন সুনামগঞ্জ জেলা যুবলীগের আহবায়ক ও সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান খায়রুল হুদা চপল,ইউএনও ইয়াসমিন নাহার রুমা,সুনামগঞ্জ পৌরসভার সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র ও জেলা যুবলীগের সিনিয়র সদস্য নুরুল ইসলাম বজলুসহ জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের একাধিক দায়িত্বশীলদেরর ধান কাটতে দেখা গেছে।,
জেলা প্রশাসনের দায়িত্বশীল সুত্র জানান, আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী চলতি এপ্রিল মাসের ২৬ হতে ৩০ তারিখ মধ্যে অতিবৃষ্টি ও ভারতের মেঘালয়য়ের পাহাড়ি ঢলের কারনে আগাম বন্যার আশংকা রয়েছে।
চলতি বোরো মৌসুমে এবার সুনামগঞ্জ জেলার ১১টি উপজেলার ছোট বড় ১৫৪ হাওরে ২ লাখ ২০ হাজার ৯৪৩ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ করা হয়েছে । এবার বোরো ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে প্রায় ১৩ লাখ মেট্রিক টন ।
এদিকে আগাম বন্যায় লাখ লাখ কৃষকের বোরো ফসলহানীর আশংকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্রæত কৃষকের পাকা ধান কেটে গোলায় তোলার নির্দেশনা দেবার পাশাপাশী জেলার কৃষকদের জন্য ৪০টি কম্বাইন হার্ভেস্টার (ধান কাটা, মাড়াই) যন্ত্র উপহার দিয়েছেন।,
অন্যদিকে বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের কারনে বিশ্বে সমূহ খাদ্য ঘাটতির সম্ভাবনা রয়েছে।
এসব কম্বাইন হার্ভেস্টার দিনের বেলায় একটানা হাওরে আট ঘন্টা ধান কাটার পর বিকেলের দিকে যন্ত্রটি বিরতির পর রাতে ফের ধান কাটতে সক্ষম হবে।
এ কারনে জেলা প্রশাসক জেলার সকল কৃষকের শতভাগ বোরো ধান কেটে গোলায় তোলার উদ্যোগ নেয়ার পাশাপাশী কৃষক, ধাওয়ালী (ধান কাটা শ্রমিক)’দের রাতে ধান কাটতে উৎসাহ দিতে গিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে নিজেই কাস্তে হাতে কৃষককের ধান কাটতে হাওরে নামলেন।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন,মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ জেলার কৃষকদের ৪০টি কম্বাইন হার্ভেস্টার (ধান কাটা, মাড়াই)যন্ত্র দিয়েছেন আগাম বন্যা ও অতিবৃষ্টির কবল হতে সারা বছরের একটি মাত্র বোরো ফসল দ্রæত কেটে গোলায় তোলতে।
তিনি আরো বলেন,এক্ষেত্রে ভাবলাম কম্বাইন হার্ভেস্টার (যন্ত্র) দিনে আট ঘন্টা ধান কাটার পর বিকেলের দিকে যন্ত্রটি বিরতি দেয়া হচ্ছে, তাহলে সেটি রাতেও ব্যবহার করে বন্যা আসার আগেই যদি আমরা শতভাগ বোরো ধান কেটে গোলায় তোলতে পারি তাহলে জেলার লাখ লাখ কৃষক ও কৃষক পরিবারের মানুষজন স্বস্থিতে থাকবেন এবং তাদেরকে খাদ্য ঘাটতির মুখে পড়তে হবেনা।
এ ব্যাপারে জেলা যুবলীগের আহবায়ক ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান খায়রুল হুদা চপল বলেছেন,চলতি বছরে করোনা ভাইরাসের প্রকোপে সাধারন মানুষজনের মধ্যে একটি আতংঙ্ক বিরাজ করা এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হাওরে শ্রমিক সংকট রয়েছে। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা মেনে কৃষকদের ধান দ্রæত সময়ের মধ্যে কেটে ঘরে তুলতে এখন কে কৃষক আর কে কৃষক না এমন শংকীর্ণতার উধের্ব থেকে আমরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুুল আহাদ সাহেবের সার্বিক সহযোগিতায় প্রশাসনের সর্বস্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীদের পাশাপাশি আমার সুনামগঞ্জ জেলা ও উপজেলা ইউনিয়ন যুবলীগের নেতাকর্মীরা গত কয়েকদিন ধরে জেলার বিভিন্ন হাওরে স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে কৃষকদের ধান কেটে ঘরে তুলে দিতে মাঠে ধান কাটছি। এছাড়া ও সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নাদের বখত,জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ, ছাত্রলীগ সহ সহযোগি সংগঠনের সকল স্তরের নেতাকর্মীরা আজ কৃষকদের পাশে ধান কেটে সহযোগিতা করছেন। তিনি আশাবাদি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা দ্রুত কৃষকদের ধান কেটে ঘরে তোলার নির্দেশনা মেনেই ধান কাটা অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।