• ত্রাণ বিতরণ

    ফোন কল পেয়ে কোয়ারেনন্টাইনে থাকা ৭ সদস্যের বাড়িতে খাদ্য পৌছে দিলেন ওসি আতিকুর

      প্রতিনিধি ৪ এপ্রিল ২০২০ , ২:১৪:৩৬ অনলাইন সংস্করণ

    সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি।। সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় হোম কোয়ারেনন্টাইনে থাকা বালু পাথর শ্রমিক পরিবারের সাত সদস্যের জন্য খাদ্য সহায়তা হিসেবে বাড়িতে গিয়ে পৌছে দিলেন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আতিকুর রহমান।
    শুক্রবার রাত ১১টায় উপজেলার বাদাঘাট উওর ইউনিয়নের মল্লিকপুর গ্রামে ওসি নিজের ব্যাক্তিগত তহবিল থেকে নিজেই ওই পরিবারের গিয়ে হোম কোয়ারেনন্টাইনে থাকা সদস্যদের হাতে খাদ্য সহায়তা তুলে দেন।
    জানা গেছে, ঢাকার গাজীপুরে তৈরী পোষাক কারখানা শ্রমিক সর্দি জ্বর কাশিতে মৃত্যুর পর নিকটাত্বীয় হিসাবে নামাজে জানাজা ও দাফনে শরীক হতে উপজেলার মাহতাবপুর গ্রামে বৃহস্পতিবার রাতে গিয়েছিলেন পাশ্ববর্তী মল্লিকপুর গ্রামের শ্রমিক পরিবারের কয়েক সদস্য।
    জানাজা শেষে গ্রামে ফেরার পর বিষয়টি জানাজানি হলে গ্রামবাসীর ভেততেই ওই রাতে করোনা ভাইরাস আতংক ছড়িয়ে পড়ে। গ্রামবাসী রাতেই বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশকে জানালে ওই শ্রমিক পরিবারের নারী শিশু পুরুষ সহ সাত সদস্যকে বৃহস্পতিবার রাত হতে দুই সপ্তাহ (১৪) দিন হোম কোয়ারেনন্টাইনে থাকার নিদের্শনা দেয়া হয়।
    শুক্রবার দিনভর নিজ বাড়ি হতে বের হতে না পেরে ওই শ্রমিক পরিবারে দেখা দেয় খাদ্য সংকট।
    শুক্রবার সন্ধ্যা রাতে শ্রমিক পরিবারের গৃহকর্তা নিরুপায় হয়ে তাহিরপুর থানার ওসির সরকারি মুঠোফোনে কল করে কান্নাজড়িত হয়ে বলতে থাকেন, স্যার আমরা নিয়ম কানুন জানিনা বলেই নিকটাত্বীয়ের জানাজা ও দাফনে গিয়েছিলাম বলে আজ সারাদিন ঘর হতে বের হতে পারিনি, কাজেও যেতে পারিনি,পরিবারের সদস্যদের জন্য চাল ডাল তৈল সবজি কিছুই কিনতে পারিনি, তাই আজ রাত থেকে আমাদের পরিবারের সবাইকে উপোস থাকতে হচ্ছে।
    ওসি আতিকুর রহমান শ্রমিক পরিবারের দূর্দশার কথা শুনে নিজের ব্যাক্তিগত তহবিল হতে চাল, ডাল, পেয়াজ,আলু,সাবান, শিশু খাদ্য সহ নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী কিনে রাতে ছুটে যান শ্রমিকের গ্রামের বাড়ি মল্লিকপুর।
    গভীর রাতে ওসি নিজে বাড়িতে গিয়ে খাদ্য সহায়তা তুলে দিতে গেলে শ্রমিক পরিবারের সদস্যরা স্বস্থির নি:শ্বাস ফেলে পুলিশ বাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
    এ সময় সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে উপজেলার মল্লিকপুর গ্রামে শ্রমিক পরিবারের আঙ্গিনায় থানার বাদাঘাট পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ এসআই মাহমুদুল হাসান,এএসআই বেলাল হোসেন, প্যানেল চেয়ারম্যান (ইউপি সদস্য) আলী আহমদ, গ্রামের সমাজসেবক আছদ্দর মল্লিক সহ বেশ ক’জন গ্রামবাসী উপস্থিত ছিলেন।,##
    সুনামগঞ্জে তাহিরপুরে পুত্রবধুর সাথে অভিমানে শাশুড়ির আত্বহত্যা
    সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
    সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে নিজের ছেলের বউয়ের সাথে অভিমান করে বিষপানে হোসনেআরা বেগম (৪৭) নামে এক শাশুড়ি আত্মহত্যা করেছেন।
    শুক্রবার রাতে তাকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে নেয়ার পর হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
    নিহত হোসনে আরা উপজেলার বড়দল দক্ষিণ ইউনিয়নের লেদারববন্দ গ্রামের ইদু মিয়ার স্ত্রী। আত্মহননকারীর পাঁচ ছেলে, এক মেয়ের মধ্যে দুই ছেলে এবং মেয়ের বিয়ের কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন করেছেন।
    নিহত নারীর পরিবার ও থানা পুলিশ জানায়, উপজেলার লেদারবন্দ গ্রামের কৃষক ইদু মিয়ার স্ত্রী হোসনে আরা বেগম বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে নিজের দ্বিতীয় পুত্রের স্ত্রীর সাথে পারিবারীক কলহে ঝগড়াঝাঁটি হয়। এরপর পুত্রবধুর সাথে অভিমান করে বাড়িতে রাখা কিটনাশক পান করেন তিনি। পরিবারের লোকজন দুপুরে উপজেলার বাদাঘাট বাজারের একটি প্রাইভেট ক্লিনিক কাম ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই নারীর পাকস্থলি হতে বিষ অপসারণে কিছুটা সুস্থ্য হয়ে উঠলে তাকে নিজ বাড়িতে পাঠিয়ে দেন।
    পরদিন শুক্রবার বিকেলে পুন:রায় দ্বিতীয় ছেলের স্ত্রীর সাথে শাশুড়ির কথাকাটাকাটি শুরু হলে হোসনে আরা সংজ্ঞাহীন হয়ে মাটিতে পড়ে যান।
    পরবর্তীতে পরিবারের লোকজন তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ওই নারীকে রাতে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন। রাতে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে সদর মডেল থানা পুলিশ ওই নারীর মরদেহ পরিবারের লোকজনকে সমঝিয়ে দেন।
    শুক্রবার রাতে তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ইকবাল হোসেন বলেন, উপজেলার বাদাঘাটে প্রাইভেট ক্লিনিক বা ডায়গষ্টিক সেন্টারে ওই নারীকে যিনি বা যেসব চিকিৎসক চিকিৎসাসেবা দিয়েছেন তাতে ধারণা করা যায় পাকস্থলি হতে পুরোপুরী বিষ বের করতে ব্যার্থ হওয়ায় বিষক্রিয়ায় উপযুক্ত চিকিৎসাসেবা না পেয়ে হয়ত ধীরে ধীরে ওই নারী মৃত্যুর মুখে পতিত হন।,
    বিষপানের আক্রান্ত রোগীকে সরকারি হাসপাতাল ব্যতিত অন্য কোন প্রাইভেট ক্লিনিক বা ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে চিকিৎসা দেয়াটা বে আইনি বলে মন্তব্য করেন ডা. ইকবাল।
    এ ব্যাপারে শুক্রবার রাতে তাহিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মো. আতিকুর রহমান বিষপানে ওই নারীর আত্বহননের বিষয়টি নিশ্চিত করেন ।

    আরও খবর

    Sponsered content