প্রতিনিধি ১৮ এপ্রিল ২০২০ , ৯:৪৪:৪০ অনলাইন সংস্করণ
মোঃ হুমায়ূন কবীর ফরীদি, জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ অনলাইন নিউজ পোর্টাল দৈনিক ভাটি বাংলা সহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশের সুবাদে ইউপি মেম্বার তারা মিয়া কর্তৃক ত্রাণ পেয়েছেন জগন্নাথপুরের ত্রাণহীন ভিক্ষুক গেদা ভাই
দেশব্যাপী করোনা ভাইরাস আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায় সরকারের তরফ থেকে সব ধরনের জনসমাগম বন্ধ করার ফলে স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া দিনমজুর হত-দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত জনসাধারণ । সরকারি নির্দেশনা মেনে কর্মহীন হয়ে পড়া দিনমজুর হত-দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত মানুষদের খাদ্য সহায়তা দেয়ার লক্ষে সরকারি ভাবে ত্রান সামগ্রী বিতরণ এর পাশা-পাশি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন সহ ব্যাক্তিগত উদ্যোগে জগন্নাথপুর উপজেলার সর্বত্র প্রায় প্রতিদিন ত্রান সামগ্রী বিতরণ করা হলেও এই সংটময় মুহূর্তে ত্রাণ পাওয়াতো দুরে থাক বিগত প্রায় ত্রিশ বছরের মধ্যে সরকারি কিংবা বেসরকারি কোন মাধ্যম থেকেই একবারও ত্রাণ পাননি রোগাক্রান্ত ভিক্ষুক গেদা ভাই। এরই পরিপেক্ষিতে করোনানায় অচল জগন্নাথপুরে ত্রাণহীন ভিক্ষুক গেদা ভাই শিরোনামে একটি সংবাদ সম্প্রতি সম্প্রতি অনলাইন নিউজ পোর্টাল দৈনিক ভাটি বাংলা সহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়ায় প্রকাশিত হলে সংবাদটি নজরে পড়ে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ এর ৫নং ওয়ার্ডের মেম্বার মোঃ তারা মিয়ার।তিনি খুঁজে বের করেন একই ইউনিয়ন এর অন্তর্ভুক্ত ৫নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ভিক্ষুক গেদা ভাইকে এবং মোঃ তারা মিয়া মেম্বার ব্যাক্তিগত অর্থায়নে ১৭ ই এপ্রিল ভিক্ষুক গেদা ভাই কে ১০ কেজি চাউল ও ৩ কেজি আলু দেওায়ার পাশাপাশি একই ইউনিয়ন এর আরেক ভিক্ষুক রুসন আলীকে ১০ কেজি চাউল ও ৩ কেজি আলু দিয়েছেন । এসময় উপস্থিত ছিলেন, জগন্নাথপুর ফায়ার সার্ভিসের ডিফেন্স অফিসার নব কুমার সিংহ, জগন্নাথপুর উপজেলা করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ কমিটি কলকলিয়া ইউনিয়ন এর পাঁচ নং ওয়ার্ড এর সদস্য শাহজাহান মাহমুদ ও সাংবাদিক মোঃ হুমায়ূন কবীর ফরীদি প্রমূখ।
এ ব্যাপারে কলকলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ এর মেম্বার মোঃ তারা মিয়া বলেন, পত্রিকার মাধ্যমে গেদা ভাই এর দুর্বস্তার কথা জানতে পেরে কিছুটা হলেও সাহায্য করতে পেরেছি। আমি অনলাইন নিউজ পোর্টাল দৈনিক ভাটি বাংলার সম্পাদক মহোদয় সহ ডটকম পরিবারের সকল এর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
এই ত্রাণ পেয়ে গেদা ভাই ও রুশন আলী আনন্দে আবেগাপ্লুত হয়ে কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন,কখন আমাদের সহায়তায় কেউ এগিয়ে আসেনি। সাংবাদিক মোঃ হুমায়ূন কবীর ফরীদি ভাইয়ের প্রচেষ্টায় বিভিন্ন প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশ হওয়ার সুবাদে মেম্বার সাহেব আমাদেরকে ত্রাণ দিয়েছেন। আমরা পত্রিকার সম্পাদক ও মেম্বার সাহেবের দীর্ঘায়ূ কামনা করছি।
উল্লেখ্য, সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ এর ৬ নং ওয়ার্ড নিবাসী মৃত মোঃ হবিব উল্লাহর ৬ ছেলে ও তিন মেয়ের মধ্যে সর্ব কনিষ্ঠ ছেলে মোঃ গেদা মিয়া ওরফে গেদা ভাই (৫৫) বিগত প্রায় ৩০ বছর আগে ছানাছুর বিক্রি করে মা- বোন সহ তিন জনের সংসার চালাতেন।এক সময় দুরারোগ্য ব্যাধীতে তিনি আক্রান্ত হলে ভিক্ষা করে ছোট মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি অসুস্থ গেদা ভাই এর ভরনপোষণ করে আসছিলেন হতভাগা মা।কিছুদিন পর মায়ের মৃত্যুর পর অসহায় গেদা ভাইকে ভরভরনপোষণ করতে শুরু করেন তার বড় বোন নিঃসন্তান ফজর বিবি(৬০)।যিনি নিজেও অসুস্থ স্বামীকে সাথে নিয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে অর্ধাহারে -অনাহারে দিনাতিপাত করছেন।