প্রতিনিধি ৩ মার্চ ২০২০ , ৯:১০:৩৮ অনলাইন সংস্করণ
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি।। আপনি হাসপাতালের ওয়ার্ডবয় শাহআলম না? আমারে চিনেন, আমি বাদল কৃষ্ণ দাস দৈনিক সুনামকণ্ঠের ক্রাইম রিপোটার। আপনার উপর নিউজ হবে, একটা বিহিত ব্যবস্থা করেন। আমার বস খুব গরম। কিছু একটা না করলে কলমের এক খোঁচায় আপনার খবর অইব। এ ভাবেই প্রথম দিন সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ওয়ার্ডবয় শাহ আলমকে কৌশলে দুর্বল করে বাদল কৃষ্ণ দাস। পরদিন নিউজ বন্ধের কথা বলে ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করে এই প্রতিষ্টানের সাংবাদিক পরিচয়ধারী বাদল কৃষ্ণ দাস। মোবাইলে কয়েক দিন ওয়ার্ড বয়ের সাথে আলাপ করে শেষ পর্যন্ত ৫’ হাজার টাকা বিকাশ নাম্বারে দিতে চাপ প্রয়োগ করে আসছিল বাদল কৃষ্ণ দাস। অব্যাহত ফোন আর হুমকির ভয়ে হাসপাতালের ওয়ার্ডবয় শাহ আলম ১’হাজার টাকা দিতে রাজি হন। কিন্ত বাদল কৃষ্ণ ৫’ হাজার টাকা খামে ভরে তার নামে জামালগঞ্জ ডায়াগনেস্টিক সেন্টারে রেখে দিতে ওয়ার্ডবয়কে বলে দিয়ে সাবধান করে দেন, যেন কাউকে জানানো না হয়। ওয়ার্ডবয় শাহআলম প্রথমে বিষয়টি ডা: এম.এ.কাসেম কে জানালে তিনি বিষয়টি শুনে ক্ষোদ্ধ হন। পরে এর প্রমান কি আছে জানতে চান ওই ডাক্তার। ওয়ার্ডবয় শাহআলম বাদল কৃষ্ণ দাসের কথোপকতনের রেকর্ডটি শোনে ডাক্তার অবাক হয়ে যান। পরদিন ওয়ার্ডবয় শাহ আলম উপজেলা আওয়ামী’লীগ সভাপতিসহ স্থানীয় বিভিন্ন রাজৈনতিক নেতৃবৃন্দ ও সিনিয়র ৪-৫ জন সাংবাদিককে বাদল কৃষ্ণ দাসের চাঁদা চাওয়ার রেকর্ড শোনিয়ে বাদল কৃষ্ণের খপ্পর থেকে বাঁচার সহায়তা চান। চাঁদা চাওয়ার বিষটি উপজেলার বিভিন্ন মহলে প্রকাশ হলে অভিনব পন্থায় বাদল কৃষ্ণ তার অনুসারী কয়েকজনকে দিয়ে ওয়ার্ডবয় শাহআলমের বিরুদ্ধে তাড়াতাড়ি বানোয়াট নিউজ করে উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর অপকৌশল করেন । এতে ওর্য়াডবয় হাসপাতালের ইমার্জেন্সি বিভাগে চোটখাটো কাটা ছিড়া জখমের কাজের সহযোগীতা করা বন্ধ করে দেন। পড়ে এলাকার অসংখ্য রোগীরা ওই ছোটখাটো বেন্ডেস ও কাটা ছোঁড়ার কাজের জন্য যন্ত্রনায় ভুগছেন প্রতিনিয়ত। অথচ ওই কাজগুলো ডাক্তাদেরর উপস্থিতিতে ওয়ার্ডবয় শাহআলম করে দিয়ে এলাকার মানুষের প্রিয় হয়ে উঠেছেন। বাদল কৃষ্ণ তার এমন অপকর্ম ঢাকতে অত্যন্ত কৌশলে ফেইসবুকে মাঝে-মাঝে বিভিন্ন অমুলক কথা লিখে কিছু লোক তার অপকর্ম পক্ষে নেয়ার চেষ্ঠা করছেন। আর তার লিখায় কয়েকজন সাফাই গাইছেন বলে জানা যায়। গত বছর এই বাদল কৃষ্ণ ফেনারবাঁক ইউনিয়ন পরিষদ থেকে অনেক মানুষের নামে-বেনামে কাউকে উপস্থিত না করে নিজেই ভিজিডি ও ভিজিএফ এর চাল নিয়ে আত্মসাদ করতে চাইলে, চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে ইউপি সদস্যদের সাথে চরম খারাপ আচরণ করলে বাদল কৃষ্ণর হাতপা বাঁধতে চাইলে স্থানীয় কয়েকজন সিনিয়র সাংবাদিকরা উপস্থিত হয়ে চেয়ারম্যান করুনা সিন্ধু তালুকদারকে অনুরোধ করে বিষয়টি ধামাচাপা দিয়ে বাদল কৃষ্ণকে ক্ষমা চাইয়ে নিয়ে আসেন। এভাবে বছরের পর বছর বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন জনকে কৌশলে নিউজের ভয় দেখিয়ে ২০ টাকা থেকে শুরু করে যার নিকট হতে যত পারে টাকা আদায় করে নিয়েছেন বলে শুনা যাচ্ছে এলাকায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তার এলাকার কয়েকজন বলেন বাদলের মত এমন দুরন্ধর খারাপ প্রকৃতির মানুষ খুবই কম আছে। খোঁজ নিয়ে দেখুন তার অনেক অনেক অপকর্মের প্রমান পাবেন। সম্প্রতি স্থানীয় সিনিয়র কয়েকজন সাংবাদিকের ছবি পোষ্ট করে ওই বাদল তাদেরকেসম্প্রতি তাকে জামালগঞ্জ প্রেসক্লাব থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এখন তার অনুসারী কয়েকজনকে নিয়ে অপকর্ম ঢাকতে সাংবাদিকদের দোষারারোপ করছে। জানাগেছে উপজেলার বিভিন্ন দফতরে গিয়ে কৌশলে প্রায়ই উৎকোচ চায়, বিভিন্ন ইউপির সদস্যরা তাদের কাজে বাঁধা সৃষ্টি করে খরচ চায় এবং না দিলে সুনামকণ্ঠে ও বিভিন্ন অনলাইনে নিউজের ভয় দেখায় ওই বাদল কৃষ্ণ দাস।
এ ব্যাপারে বাদলকৃষ্ণ দাস বলেন, আমার বিরুদ্ধে এগুলো মিথ্যা বলা হচ্ছে, চাঁদা চাওয়ার রেকর্ডকৃত বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি কিছুক্ষণ চুপ থেকে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেন এবং বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে কিছুক্ষণ পড়ে বলেন আমি হাসপাতালের ওয়ার্ডবয় শাহ আলমের সাথে ঢং (মজা) করছি। চাঁদা চাওয়ার বিষয়টি জামালগঞ্জে ‘টক অবদ্যা টাউনে’ পরিনত হয়েছে। এ ব্যাপারে শাহ আলম জামালগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। মামলার প্রস্তুতির খবর শোনে বাদল উল্টো ফেইস বুকে মিথ্যা কথা লিখে তার অপরাধ ধামাচাপার চেষ্টা করছে। স্থানীয় ৫-৬ জন সাংকাদিক এ বিষয়ে বলেন, বাদলের ব্যাপরে আমাদের কাছে জানতে চাইবেননা। এটা তার ব্যাপারে তার কাছে জানতে চাইলে ভাল হবে। তার এম অপকর্মমের জন্য মানুষের কাছে জবাব দিতে দিতে হেনস্থ হচ্ছি আমরা, কত অভিযোগ বলার শেষ নেই।
এ ব্যাপাের শাহ আলম বলেন বাদল বাবু প্রায় সময়ই আমারে টাকার জন্য চাপ দেয়। আমার হার্টের সমস্যা আছে এমন কথা বলে যে কোন সময় আমার জীবন নাশ হতে পারে। আমি কোন অন্যায় করিনি আপনারা মানুষকে জিঞ্জাস করেন। তারপরেও বাদল কৃষ্ণ দাস সুনাম কণ্ঠের কার্ড দেখিয়ে আমার কাছে দশ হার টাকা চাঁদা দাবী করে। শেষে জামালগঞ্জ ডায়াগনেস্টিক সেন্টারে খামে ভরে রাখতে বলে।
এ ব্যাপারে আলীগ নেতা আবুল কালাম সরকার বলেন, বাদল কৃষ্ণ দাশের চাঁদা চাওয়ার রেকর্ডটি শুনে হতভম্ব হয়েছি। তার সম্পর্কে আরো চাঁদা চাওয়ার এমন বিষয় শুনেছি, এখন রেকর্ড শুনে বুঝলাম বাদল কৃষ্ণ বাবু সবসময় এমন আকাম করে, আরো অভিযোগ শুনছি।
এ ব্যাপারে জামালগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী’লীগ সভাপতি হাজী মোহাম্মদ আলী বলেন, বাদল কৃষ্ণ দাস সম্পর্কে বহু অভিযোগ শুনেছি। এবার নিজের কানে ১০ হাজার টাকা চাঁদা চাওয়ার রেকর্ডটি শুনলাম যা চরম নিন্দনীয় ঘৃণিত। এর একটা বিহিত ব্যাবস্থা হওয়া প্রয়োজন। না হয় এভাবে আরো অন্যায় অপকর্ম করবে সে।
এ ব্যাপারে জামালগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ সাইফুল আলম ওয়ার্ডবয় শাহ আলম কৃর্তক অভিযোগ দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান ।