• স্বাস্থ্য বাংলা

    সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ জানেন না চিকিৎসা-বর্জ্য কোথায় যাচ্ছে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে

      প্রতিনিধি ১৭ মার্চ ২০২০ , ২:৩২:১৭ অনলাইন সংস্করণ

     ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষ মাহমুদ আহসান হাবিব,ঠাকুরগাঁও: জেলা শহর ঠাকুরগাঁওয়ের সরকারি হাসপাতাল কিংবা বেসরকারি ক্লিনিক/ডায়াগনস্টিক সেন্টার কর্তৃপক্ষ কারোরই জানা নেই তাদের হাসপাতাল ও ক্লিনিক থেকে প্রতিদিন যে শত শত কেজি ক্লিনিক্যাল বর্জ্য বের হচ্ছে তা যাচ্ছে কোথায় । তাদের উদাসীনতা আর স্বেচ্ছাচারিতায় মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে জেলা শহরের সাধারণ মানুষ। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের চিকিৎসা- বর্জ্য (ব্যবস্থাপনা ও প্রক্রিয়াজাতকরণ) বিধিমালা ২০০৮ প্রজ্ঞাপন মোতাবেক “চিকিৎসা-বর্জ্য” – মানবকুলের চিকিৎসা, প্রতিষেধক ব্যবস্থা, রোগ নির্ণয় বা রোগ সংক্রান্ত গবেষণার ফলশ্রæতিতে উৎপাদিত যে কোন কঠিন, তরল, বায়বীয় ও তেজষ্ক্রিয় পদার্থ যা নির্গত, নিক্ষিপ্ত বা বাস্পীকৃত হয়ে পরিবেশের ক্ষতিকর পরিবর্তন সাধন করে বোঝায়। একই প্রজ্ঞাপনে “চিকিৎসা-বর্জ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ” বলতে চিকিৎসা-বর্জ্য সংগ্রহ, পৃথকীকরণ, প্যাকেটজাতকরণ, বিনষ্টকরণ, ভস্মীকরণ, পরিশোধন, বিশোধন ও অপসারণকে বোঝানো হয়েছে এবং একই সাথে “চিকিৎসা- বর্জ্য ব্যবস্থাপনা” বলতে চিকিৎসা-বর্জ্য পরিবহণ, মজুদকরণ, নথি সংরক্ষণ, পরিবীক্ষণ, পর্যবেক্ষণ ও তত্ত¡াবধান বোঝানো হয়েছে। সুনির্দিষ্ট আইন ও নির্দেশনা থাকলেও জেলার কোন সরকারি বা বেসরকারি হাসপাতাল, কনসালটেশন চেম্বার, প্রাইভেট ক্লিনিক, নার্সিংহোম, প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরি, ডিসপেনসারি, ওষুধের দোকান তাদের চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও প্রক্রিয়াজাতকরণ বিষয়ে কোন পদক্ষেপই গ্রহণ করছেনা। ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায় সেখানকার চিকিৎসা-বর্জ্য ফেলা হচ্ছে হাসপাতাল সীমানার মধ্যেই এবং উন্মুক্ত স্থানে। সেখানে অবাধে বিচরণ করছে গরু ও কুকুর,বিড়াল। ঠোঁটে করে তুলা গজ ব্যাÐেজ নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় উড়ে যাচ্ছে কাক । আধুনিক সদর হাসপাতালের তত্ত¡াবধায়ক ডা. নাদিরুল আজিজ চপল জানান, “হাসপাতালের ইনসিনেরেশন কক্ষটি (বর্জ্য ধ্বংস করার কক্ষ) ৭/৮ বছর যাবৎনষ্ট হয়ে আছে। আমরা বিষয়টি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে বহুবার জানিয়েছি। এটি মেরামত করতে মাত্র ২/৩ লাখ টাকা প্রয়োজন। কিন্তু স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আজ পর্যন্ত এব্যাপারে কোন জবাব দেয়নি। তাই ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে বর্জ্য পোড়ানো হয়। “হাসপাতালের ইনসিনেরেশন কক্ষ পরিদর্শন করে দেখা যায়- কক্ষটির ভগ্ন দশা এবং এর সামনেই হাসপাতালের বর্জ্যের ভাগাড়। বর্জ্যের উপর গবাদি পশু, কুকুর ও বিড়াল বিচরণ করছে। এসব কুকুর বিড়ালই আবার হাসপাতালের ভেতরেও প্রবেশ করছে । এ যেনো এক ভয়াবহ অবস্থা। চারিদিকে বর্জ্য ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। এর আশে পাশে হাটা দায়। দুর্গন্ধে মানুষের অবস্থা দুর্বিসহ। সদর হাসপাতালের কাছাকাছি বেশ কয়েকটি ক্লিনিক রয়েছে। এর একটি “প্রাইম হাসপাতাল”। এই হাসপাতালের ম্যানেজার ফারুক হোসেন ও মার্কেটিং সেক্রেটারি রেজাউল জানান, হাসপাতালের বর্জ্য আমাদের সুইপার ভ্যানে করে নিয়ে যায়। কিন্তু সেগুলি তারা কোথায় ফেলে তা আমরা জানি না। আরো বেশ কটি ক্লিনিক ঘুরে অভিন্ন তথ্য পাওয়া যায়। মাম হাসপাতালের ম্যানেজার সফিউল আলম ভুট্টু ও হিসাবরক্ষক সুরুজ্জামান বলেন, সুইপার এখানকার বর্জ্য ভ্যানে করে নিয়ে যায়। তবে নিরাপদ ডায়াগনোস্টিক সেন্টারের ডন বলেন, আমাদের বর্জ্যরে পরিমাণ কম। আমার তত্ত¡াবধানে প্রতিদিন এগুলি পোড়ানো হয়। ঠাকুরগাঁও জেলার ক্লিনিক ও ডায়াগনোস্টিক সেন্টারগুলি থেকে প্রতিদিন কী পরিমাণ চিকিৎসা-বর্জ্য নির্গত হচ্ছে তার সঠিক পরিসংখ্যান নেই কোন কর্তৃপক্ষের কাছেই । জেলার সচেতন মানুষ মনে করেন অবিলম্বে জনস্বার্থে চিকিৎসা বর্জ্য পরিবেশসম্মতভাবে ইনসিনেরেশনে পুড়িয়ে ফেলার ব্যবস্থা করা সহ ক্লিনিক্যাল বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ প্লান্ট তৈরি করা হোক।

    আরও খবর

    Sponsered content