প্রতিনিধি ২১ মার্চ ২০২০ , ৬:২৬:৪৪ অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিনিধি৷৷ সুনামগঞ্জ তাহিরপুর হাওরাঞ্চলে করোনাভাইরাস আতঙ্কে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা এলোমেলো হওয়ার পথে । কি করলে নিজের এবং পরিবারপরিজনদের নিরাপদ রাখা যাবে এমন ভাবনাই ঘুরপাক খাচ্ছে এখানকার ধারণ মানুষের। অন্যদিকে করোনা ভাইরাস সংক্রামক থেকে দূরে থাকার পরামর্শমূলক সরকারী-বেসরকারী প্রচার-প্রচারণা টেলিভিশনের সংবাদ টকশো এবং সামামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে দেয়া স্ট্যাটাস সাধারন মানুষকে দিকনির্দেশনার জানান দেওয়া অব্যাহত রয়েছে। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে বিভিন্ন ধরনের আদেশ উপদেশ এখন সাধারন মানুষকে কিংকর্তব্য বিমূঢ় করে তুছে। কতদিন এ অবস্থা চলতে থাকবে এবং কখনোই বা এ অবস্থা থেকে মানুষ মুক্তি পাবে এ প্রশ্নই এখন হাওরাঞ্চলের সর্বস্তরের জনসাধারণের মধ্যে। ইতিমধ্যেই দেশের অন্যান্য এলাকার ন্যায় হাওরাঞ্চলেও সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উপজেলা প্রশাসন হতে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি সব ধরনের সভা-সমাবেশ গণসংযোগ জমায়েত বৃহৎ পরিসরে ধর্মীয় ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধ রাখার জন্য উপজেলা প্রশাসন হতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে । সারাদেশের ন্যায় এখন হাওর পারের সাধারন মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে করোনা ভাইরাস আতঙ্ক।এই অঞ্চলের নিম্ন আয়ের হতদরিদ্র জনগোষ্ঠী জীবিকার তাগিদে পারছে না ঘরে থাকতে করোনার আতঙ্ক নিয়েই কেউ কেউ জীবিকার সন্ধানে ছুটে বেড়াচ্ছে এদিক ওদিক।কারণ তাদের নেই কোন জমানো অর্থ বা খাদ্যদ্রব্য,তারা নিত্য আনে নিত্য খায়। জানাযায় করোনা ভাইরাসের চেয়ে মানুষের কাছে বেশী ভয়াবহ হয়ে উঠেছে আতংক ছড়ানো। করোনা ভাইরাস নিয়ে বিভিন্ন ফেইক আইডি ব্যবহারকারীদের মনগড়া ব্যাখ্যাবিহীন রসালো মন্তব্য ও অপপ্রচারে ধনাঢ্য পুঁজিবাদ ক্রেতারা পণ্য পাবেনা এমন ধারণায় কেউ কেউ প্রয়োজনের অধিক এক কেজির স্থলে ৪থেকে ৫ কেজি করে পণ্য ক্রয় করায় নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমুল্যের লাগাম ছিড়তে বসেছে।কয়েকদিনের ব্যবধানেই চাল-ডাল চিনি পেঁয়াজ-রসুণসহ বেশ কিছু দ্রব্যমুল্যের দাম বাড়তে শুরু করেছে। অন্যদিকে উপজেলা প্রশাসন তাহিরপুর এর ইউএনও নামে অফিসিয়াল আইডি হতে করোনাভাইরাস হতে নিজেকে রক্ষায় বিভিন্ন দিকনির্দেশনা ও এই করোনাভাইরাস কে পুঁজি করে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি না করতে উপজেলার সর্বস্তরের ব্যবসায়ীদের প্রতি আহবানে দেশের এই সংকটকালীন মুহূর্তে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করে অথবা পণ্যের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে,অধিক মুনাফা লাভের আশায় দরিদ্র ক্রেতাসাধারণের জীবনযাত্রা এলোমেলো না করে তাদের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানানো হয়।
বিষয়টি মহামারি আকার ধারন করার আগেই লাগাম টেনে ধরেছে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন।তারেই ধারাবাহিকতায় আজ শনিবার ( ২১,মার্চ) উপজেলার লাউড়েরগড়,বানিজ্যিক কেন্দ্র বাদাঘাট বাজার সহ বিভিন্ন বাজারে মনিটরিং ও সচেতনতামুলক লিফলেট বিতরণ করলে অনেকটাই থেমে যায়। এর পরও এই অঞ্চলের চিহ্নিত কতিপয় ব্যবসায়ী দাম বাড়ানোর জন্য ওঁৎ পেতে আছে।
এদিকে তাহিরপুর প্রকৃতির সৌন্দর্যের লীলাভূমি টাংগুয়ার হাওর সহ বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে করোনা ভাইরাসের ভয়ে প্রকৃতির সৌন্দর্য দেখতে আসা ভ্রমণ পিপাসুদেরও তেমনটা দেখা মিলছে না। শুধু তাই নয় এখানকার স্থানীয় বাসিন্দারাও হতদরিদ্র নিম্ন আয়ের দিনমজুর লোকজন ছাড়া,অন্যরা প্রয়োজন ছাড়া খুব বশী বাইরমূখী হচ্ছেন না। হাওরাঞ্চলের হাট-বাজার যেখানে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মানুষের সমাগম ছিল বর্তমানে এসব স্থানের চিত্র আমুল পাল্টে গেছে। এমন চিত্রই ফুটে উঠেছে এই এলাকায়। সন্ধ্যা হওয়ার সাথে সাথে রাস্তাঘাট ফাঁকা হতে থাকে।