প্রতিনিধি ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ , ৩:৫৭:১০ অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ খাটো গড়নের ছোট ছেলে ওমর ফারুক। আজ ১৪ ফেব্রুয়ারী কথিত ভালবাসা দিবসে সিলেট নগরীর আম্বরখানা পয়েন্টের পশ্চিম-দক্ষিণ কোনে গ্যাসে ফুলানো সুতায় বাধা লাল টুকটুকে বেলুন (লাভ বেলুন) বিক্রি করছিল।
পথচারী উৎসুক দর্শনার্থীরা বেলুন সহ ছোট ওমর ফারুকের ছবি তুলছেন। কেউ কেউ দাম জিজ্ঞাসা করছেন আবার কেউ কিনেও নিচ্ছেন। প্রতিটি বেলুন ২০ টাকা। কথা হয় এ প্রতিবেদকের সাথে- ওমর ফারুক বাবা মা-র একমাত্র ছেলে,
১০ বছর বয়সে সে লেখাপড়ায় থাকার কথা রাস্তায় দাড়িয়ে বেলুন বিক্রি করছে কেন? প্রশ্নের জবাবে সে জানায় তার বাবা দিনমজুর দুই বোনের মধ্যে ১বোনের বিয়ে হয়েছে অপর বোন ঘরে আছে অভাবের কারণেই লেখাপড়ায় যায়নি সে!
সরকার বই দিচ্ছে টাকাও দিচ্ছে তাহলে কেন স্কুলে ভর্তি হওনি? উত্তরে ওমর ফারুক জানায় তার বাবা বলেছে শহরে ভর্তি হতে অনেক টাকা লাগে তাই আমরা গরিব মানুষের আবার লেখাপড়া কি-?
স্যার আমার একটা ছবি ফেসবুকে দিবেন!
তুমি ফেসবুক সম্পর্কে কিভাবে জানতে পারলে? সে জানায় মোবাইলে মানুষ নেট চালায় পৃথিবীর সবাইকে দেখতে পারে!!!
যেকোনো প্রশ্নের জবাব তাৎক্ষণিকভাবে সোজাসাপ্টা সাবলীলভাবে দিয়ে দিচ্ছে যেনো সে লেখাপড়া জানা মেধাবী ছেলে।
তার সাথে আলাপ কালে সেখানে খানিকটা ভীড় জমে যায় আর সাথে বেলুন বিক্রিও।
তখন চোখে ভেসে ওঠে আমার ১০ বছরের ছেলের মুখাবয়ব সে পিএসসি পরিক্ষার্থী। আর ওমর ফারুক তার বয়সও ১০ বছর, আজও কেন অক্ষর জ্ঞান শুণ্য-?
সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলের ছেলে ওমর’রা শহরে গলাকাটা ভর্তি ফি’র জন্যে ওরা শিক্ষা সুবিধা বঞ্চিত।
সেশন ফি ও ভর্তি ফি’র মতো পকেট কাটা বন্ধ না’হলে আরও কত ওমর ফারুক ঝরে পড়বে তার ইয়ত্তা নেই।
ঘণ্টাখানেক দাঁড়িয়ে মাত্র ১বেলুন বিক্রি হওয়া ওমরের এ প্রতিনিধি’র আলাপ ও ছবি তোলার ফাঁকে বেলুন অনেক বিক্রি হওয়ার আনন্দে যেনো কৃতজ্ঞতা’র শেষ নেই তার।