প্রতিনিধি ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ , ৩:৫৩:১২ অনলাইন সংস্করণ
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি।। সুনামগঞ্জের দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার পূর্ব পাগলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মৃত্যুঞ্জয় সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম দর্ূনীতি ক্ষমতার অপব্যবহার,তহবিলের টাকা আত্মসাৎ এবং বিদ্যালয়ের স্বার্থের পরিপন্থি কার্যক্রমের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা।
সোমবার দুপুর ২টায় উপজেলার শান্তিগঞ্জ বাজারের দক্ষিণ সুনামগঞ্জ প্রেসক্লাবের অস্থায়ী কাযার্লয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করেছেন পূর্ব পাগলা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানের্জি কমিটি সভাপতি মো: মছদ্দর আলী ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যবৃন্দ ।
লিখিত বক্তব্যে সভাপতি মো: মছদ্দর আলী বলেন, প্রধান শিক্ষক মৃত্যুঞ্জয় সরকারের অনিয়ম, দূনর্ীতি,তহবিলের টাকা আত্মসাৎ, ক্ষমতার অপব্যবহার স্বার্থের পরিপন্থি কার্যক্রমের প্রতিকার ও বিচার প্রার্থথী হয়ে বিগত ১ বছর ধরে প্রশাসনের বিভিন্ন অফিসে কয়েক দফা দরখাস্ত করে কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি। আমরা ২০১৭ সালের ১৫ নভেম্বর প্রধান শিক্ষকের দূনর্ীতির বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক সুনামগঞ্জ বরাবর অভিযোগ দায়েরের পর জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ের সহকারি কমিশনার মিল্টন চন্দ্র পাল সরেজমিন তদন্ত করেন। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলেও আদৌ তদন্তের প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি। এছাড়া তদন্তকালে বিভিন্ন তথ্য ও খাতওয়ারী সভাপতির স্বাক্ষরকৃত বিবরণ গোপন করা হয়েছে। পরে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিক্ষা ও আইসিটি শাখার কমিশনারের সাথে যোগাযোগ করেও প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি। একই বিষয়ে বিগত ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৯ ইং তারিখে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা নিবার্হী অফিসার বরাবর অভিযোগ দায়ের করার পর তিনি তদন্তের দায়িত্ব উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকতার্ অশোক রঞ্জন এর উপর দিলেও আজ ও কোন সুরাহা হয়নি। কোন প্রতিকার না পেয়ে বিগত ৭ জুলাই ২০১৯ ইং তারিখে দূনর্ীতিবাজ প্রধান শিক্ষককে চাকুরী থেকে বরখাস্ত করার বিহিত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের কাছে অভিযোগ করলে তিনি বিষয়টি জেলা শিক্ষা অফিসারের নিকট দরখাস্ত প্রেরণ করেন। জেলা শিক্ষা অফিসার বিগত ০৯ আগষ্ঠ ২০১৯ ইং তারিখে সরেজমিন তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পেলেও অদ্যবদি পর্যন্ত রিপোর্ট দেননি এমনকি কোন ব্যবস্থাও নেননি। এছাড়া লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন বিগত ২৫ অক্টোবর ২০১৮ ইং তারিখে অভিভাবকগনের ভোটে নিবার্চিত কমিটি শিক্ষাবোর্ড কতর্ৃক অনুমোদিত হয়। কমিটি অনুমোদনের পর বিগত ৩১ অক্টোবর সাজানো সভা আহবান করে প্রধান শিক্ষকের যোগদানের পর ১০ জুলাই ২০১২ ইং থেকে ৩০ অক্টোবর ২০১৮ ইং তারিখ পর্যন্ত ৭ বছরের বিদ্যালয়ের আয় ব্যয়ের হিসাব পরীক্ষা নিরীক্ষা দেখিয়ে অনুমোদন করেন সেই প্রধান শিক্ষক। আমরা কমিটির লোকজন বার বার তাগিদ দেওয়া সত্ত্বে ও বিদ্যালয়ের স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তির ষ্টক রেজিষ্টার প্রদান করেননি এমনকি বিভিন্ন তথ্য প্রদান করার জন্য লিখিত চিটি দিলেও তিনি কোন তথ্য দেননি। বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকে বর্তমান পর্যন্ত শিক্ষাথর্ীদের কাছ থেকে যাবতীয় ফিসের প্রতি বছর ওয়ারী প্রায় ৫-৬ লক্ষ টাকা উত্তোলন করে কোন ব্যাংকে জমা না করে সাবেক সভাপতি ও একাডেমিক সুপারভাইজারের সাথে যোগসাজসে ভাগ ভাটোয়ারা আত্মসাৎ করে অন্যায়ভাবে লাভবান হয়েছেন। এছাড়া বিদ্যালয়ের অনুকূলে সরকারি বিভিন্ন বরাদ্দের টাকা, বিদ্যালয়ের ৮০ হাত লম্বা ঢেউটিন ও কাঠের তৈরী ঘর ভেঙ্গে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা এবং বিদ্যালয়ের ৭-৮ টি রেন্টিগাছ কেটে বিক্রি করে সম্পূর্ণ টাকা আত্মসাৎ করেছেন প্রধান শিক্ষক। এছাড়া বিদ্যালয়ের ভূমিদাতা না হয়েও কিভাবে একজন লোক প্রতিাষ্ঠাতা সদস্য হন এবং যারা বিদ্যালয়ে ভূমি দান করলের তারা প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হতে পারেন না এই বিষয়ে বার বার লিখিত দিয়ে ও কোন জবাব পাওয়া যায়ানি। বিগত ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ইং তারিখে শিক্ষাথর্ীদের বৃত্তির মোট ২২ হাজার ৭ শত ৫০ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন। বিদ্যালয়ে জাতীয়, সামজিক, ধমর্ীয় অনুষ্ঠান পালন করা হয়না। এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ক্ষুব্দ হয়ে বিরুদ্ধে শিক্ষক কর্মচারীরা অঙ্গিকারনামা দিয়েছেন। এলাকার অভিভাবক থেকে শুরু করে সচেতন মহল ক্ষুব্দ রয়েছেন এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে। কমিটির সদস্যদের সাথে প্রধান শিক্ষকের সমন্বয় না থাকায় বিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থা দিন দিন ধ্বংসের দিকে ধাবিত হচ্ছে। এই অবস্থা থেকে পরিত্রানের জন্য এবং দূনর্ীতিবাজ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উর্দ্ধতন কতর্ৃপক্ষ সহ দেশবাসীরর কাছে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আকূল আবেদন জানান সভাপতি। সংবাদ সম্মেলনের সময় উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য কাচা মিয়া, শুকুর মিয়া,মাসুক মিয়া, শিবলী রানী দে।