প্রতিনিধি ২৩ জানুয়ারি ২০২০ , ৬:২৯:৫৬ অনলাইন সংস্করণ
বিশেষ প্রতিনিধিঃ- সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলায় যৌতুকের জন্য ২সন্তানের জননী এক গৃহবধূকে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করে আত্মহত্যার ঘটনা বলে চালিয়ে দেওয়া পায়তারার অভিযোগ পাওয়া গেছে নিহতের স্বামী ও শশুর বাড়ির লোকজনের উপর। এমন কি নিহত রুনা বেগমের বাপের বাড়ির লোকজনকে মৃত্যুর সংবাদ না জানিয়ে গোপনে লাশ দাফনের চেষ্টা করে স্বামী ও শশুর বাড়ির লোকজন।
গোপন সুত্রে খবর পেয়ে নিহত রুনার আত্মীয়স্বজন সেখানে গিয়ে শরীরে একাধিক স্থানে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন দেখতে পান।
ঘটনাটি ঘটেছে গত ১৫ জানুয়ারি শাল্লা উপজেলার ১নং আটগাঁও ইউপি’র উজান ইয়ারাবাদ গ্রামে।
মামলার বাদি ও নিহতের ভাইয়ের মাধ্যমে জানা যায়- উজান ইয়ারাবাদ গ্রামের মোঃ আব্দুল খালেকে’র পুত্র মোঃ রাজু মিয়ার সাথে ২০০৯ সালে দিরাই উপজেলার তাড়ল ইউপির ভাটিধল গ্রামের মৃত গিয়াস উদ্দিনের মেয়ে রুনা বেগম’র বিয়ে হয়।
রুনা বেগম ও রাজু মিয়ার সংসারে ‘রিচি ও রাহুল মিয়া’ নামে দু-টি সন্তান জন্ম গ্রহণ করে। বিবাহের পর হতে রুনা রাজু’র সংসার সুন্দর মতো চলছিল। সন্তান জন্মের পর হতেই রুনার স্বামী রাজু মিয়া ও তার পরিবারের লোকজন ক্রমাগত যৌতুকের দাবিতে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন শুরু করে। রুনার ভাই শাহরিয়ার আলমের দাবি যৌতুকের জন্যে নিহত রুনা বেগমকে প্রায় সময়ই জ্বালা-যন্ত্রণা ও মারপিটের শিকার হতে হয়েছে।
দুটি সন্তানের ভবিষ্যত বিবেচনায় মুখ বুঝে সব যন্ত্রণা সহ্য করে স্বামীর সংসার চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
কিন্তু পরধন লোভী রাজু মিয়া’র পরিবার যৌতুকের টাকার জন্যে রুনার পরিবারের লোকদেরও হুমকি দিতে থাকে! টাকা না দিলে রুনা বেগমকে দুনিয়া থেকে চিরতরে বিদায় করে দেওয়ার হুমকি দেয়।
কিন্তু রুনার পরিবার বুঝতে পারেননি সত্যিই চিরতরে বিদায় করে দিবে তার পাষন্ড স্বামী ও তার পরিবার। অমানুষিক ভাবে নির্যাতন করে হত্যার পর এলাকায় আত্মহত্যার কাহিনি রটিয়ে নিহতের বাপের বাড়িরতে মৃত্যুর সংবাদ না জানিয়ে গোপনে লাশ দাফন করার চেষ্টা ও প্রশাসনকে প্রভাবিত করে ঘটনাটি ধামাচাপা দিয়ে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়া ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় চলছে।
নিহতের বড় ভাই বশির মিয়া ও শাহরিয়ার আলম উপস্থিত স্বাক্ষীগন সহ রুনা বেগমের শরীরের বিভিন্ন স্থানে বহু আঘাতের চিহ্ন দেখতে পান। আঘাতের চিহ্ন দেখে তাদের সন্দেহ হলে স্বাক্ষীগন নিয়ে শাল্লা থানায় যেয়ে ঘটনার বর্ননা দিলে তৎক্ষনাৎ শাল্লা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে (১৫/০১/২০২০ ইং রাত ১০.০৫ ঘটিকার সময়) পরিদর্শন করে লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করেন।
নিহতের বাম হাতের কবজিতে কালো দাগ ও কনুইয়ে ফুসকাসহ কালো দাগ বাম-স্তনে কালো দাগ ও গর্ত সহ দুই হাটুতে কালো দাগ ও ফোলা পরিলক্ষিত হয়।
রুনা বেগমের মৃতুর সংবাদ যথা সময়ে তার বাপের বাড়িতে না যানানো ও তাড়াহুড়ো করে লাশ দাফনের চেষ্টা পরিকল্পিত ভাবে হত্যার সন্দেহ ঘনি ভূত হচ্ছে।
রুনার স্বামীর বাড়ির লোকজনের আচরণও রহস্যজনক বলে জানিয়েছেন রুনার বড় ভাই বশির মিয়া।
লাশের পোস্টমর্টেম রিপোর্ট যাই আসুক না কেন, রুনা বেগমের মৃতদেহের একাধিক আঘাতের চিহ্ন নির্মম নির্যাতনের সাক্ষ্য দিচ্ছে।
আর রহস্যের জট খুলতে ময়না তদন্তের রিপোর্ট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
বোন হারিয়ে রুনা বেগমের ভাইয়েরা তাদের বোনের হত্যাকারীদের উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করতে প্রশাসন ও জাতির বিবেক গণমাধ্যমের প্রতি আকুতি জানিয়েছেন।