• অনিয়ম / দুর্নীতি

    রুহিয়ায় শ্যালো মেশিন দিয়ে নদী খনন! ঝুঁকিতে ব্যারেজ-সেতু-সড়ক-বসতি

      প্রতিনিধি ৩ জানুয়ারি ২০২০ , ১০:১৯:০৯ অনলাইন সংস্করণ

    মাহমুদ আহসান হাবীব ঠাকুরগাঁও: নিয়ম-নীতির বালাই নেই, নেই সরকারি নির্দেশনার প্রয়োগ। নদী খননের নামে শ্যালো মেশিনে ভূ-গর্ভস্থ মাটি উত্তোলন করে দায়সাড়া কাজ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। ১৯৯১ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ, টাঙ্গন নদীতে ব্যারেজ নির্মান করেন, উদ্দেশ্য ছিল আমন মৌসুমে সেচ সুবিধা প্রদান করা। টাঙ্গন ব্যারেজ আওতাভুক্ত জমি ৬০৭০ হেক্টর এবং সেচ যোগ্য জমি ৪৪৫০ হেক্টর। সেই টাঙ্গন নদীতে এভাবেই খনন করছে খনন কাজে নিয়োগ পাওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তাজুল – নিয়াজ ( জেভি )। দরপত্রে ড্রেজার ব্যবহারের কথা থাকলেও তার কোনো ব্যবহার নেই খনন কাজে। ফলে, নদীর ওপর নির্মিত সেতু, পাশের সড়ক ও আশেপাশের গ্রাম হুমকির মুখে পড়েছে। ৬৪ টি জেলার অভ্যন্তরস্থ ছোট নদী, খাল ও জলাশয় পুনঃখনন প্রকল্প (১ম পর্যায়)। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার, রুহিয়া থানাধীন টাঙ্গন নদীর কি : মি: ১০.০০ হতে কি : মি: ৪৫.০০=৩৫.০০ কি : মি: পুন:খনন কাজ। ২৭,১৪,৩৪,৭০০.৫৭৪ (সাতাশ কোটি চৌদ্দ লক্ষ চৌত্রিশ হাজার সাতশত দশমিক পাঁচশত চার) টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, তাজুল-নিয়াজ (জেভি), শরিফ ম্যানশন (৪র্থ তলা), ৫৬ – ৫৭, মতিঝিল বা/এ, ঢাকা – ১০০০। কিন্তু নদী ড্রেজিংয়ের কাজে ড্রেজার মেশিন ব্যবহারের নিয়ম থাকলেও তা না মেনেই শ্যালো মেশিনের মাধ্যমে খনন করছে প্রতিষ্ঠানটি। নকশা অনুযায়ী নদীর দু’পাশ ১:৩ অনুপাতে খননকৃত মাটির পরিমান = ১৮১৯৬৮৯. ৯০৭ ঘনমিটার। ঘাস লাগানো হবে = ১০৫০০০ বর্গ মিটার। গাছ লাগানো হবে – ৭০০০টি। তবে, প্রকল্পটিতে ড্রেজিং কাজের জন্য ড্রেজার মেশিন দিয়ে খনন কাজ বাস্তবায়ন করার কথা থাকলেও তা করা হচ্ছে না। সম্পূর্ণ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে ইঞ্জিন চালিত শ্যালো মেশিন দিয়ে। এদিকে, আধা কিলোমিটারের মধ্যে ৫টি অবৈধ শ্যালো মেশিন ব্যবহার করে ভূ-গর্ভস্থ মাটি উত্তোলন করে দায়সাড়া নদী খনন কাজ করছে পাউবো ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। আর খনন করা পলিমাটি ও বালু গুলো ফেলা হচ্ছে নদীর কাছেই। যা বর্ষার মৌসুম আসলে বৃষ্টির পানির সঙ্গে আবারো নদীতে গিয়ে পড়বে। এতে একদিকে যেমন সরকারের কোটি টাকা নদীর পানিতে ভেসে যাবে, অন্যদিকে ক্ষতিগ্রস্থ হবে আশেপাশের ফসলি জমি, ব্রীজ, রাস্তা-ঘাট ও পার্শ্ববর্তী গ্রাম। নদী নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলো বলছে, শ্যালো মেশিন দিয়ে মাটি উত্তোলন করলে তা হবে অপরিকল্পিত নদী খনন। যা নদীর নাব্যতা ফেরার পরিবর্তে পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত করবে। বিশেষ করে যে গভীরতা নির্ধারণ করা হয়েছে তা পরিকল্পনা অনুযায়ী বাস্তবায়ন করতে পারবে না। ফলে চারপাশ থেকে বালুর স্তর ভেঙে তলদেশ ভরাট হয়ে যাবে। নদী বাচাঁও দেশ বাচাঁও আন্দোলনের আহ্বায়ক, শেখ ইকবাল হোসেন বলেন, নদী খনন কাজে সরকারি যে নির্দেশনা দেওয়া আছে তা মানতে হবে। অন্যথায় শ্যালো মেশিন দিয়ে নদী ড্রেজিং কাজ করলে তা পরবর্তীতে ক্ষতির কারণ হবে। এসব বিষয় নিয়ে কথা হয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী, মোঃ নকিবুজ্জামান খান, ঠাকুরগাঁও পওর উপ-বিভাগ ১, বাপাউবো , ঠাকুরগাঁও সঙ্গে। তিনি ঠিকাদারের পক্ষে সাফাই গেয়ে বলেন, ড্রেজার মেশিন আমাদের দুই ধরনের আছে, নরমাল ড্রেজার ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের ড্রেজার কিন্তু এই দিকে তো ঐ ড্রেজার ব্যবহার করা সম্ভব না, ঐ নদীও না। সেই জন্য লোকাল ড্রেজার(শ্যালো মেশিন) ব্যবহার করা হচ্ছে।

    আরও খবর

    Sponsered content