প্রতিনিধি ১১ জানুয়ারি ২০২০ , ৩:৩০:৫৭ অনলাইন সংস্করণ
কুলেন্দু শেখর দাস, চীপ রিপোর্টার।। সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার সীমান্তে মাদ্রাসায় পড়ুয়া সাত বছর বয়সী শিশু তোফাজ্জল অপহরণ ও হত্যাকান্ডে জড়িত সন্দেহে থানা পুলিশ তার দাদা চাচা ফুফু সহ আরো সাত জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নিয়ে গেছেন।, শনিবার সন্ধায় তাহিরপুর থানা পুলিশ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
আটককৃতরা হলেন,উপজেলার সীমান্ত গ্রাম বাঁশতলার নিহত শিশু তোফাজ্জলের দাদা জয়নাল, চাচা একবাল হোসেন,ফুফু শেফালী বেগম,অপর ফুফু শিউলী বেগম, প্রতিবেশী হবি রহমান, তার স্ত্রী খইরুন নেছা ও তাদের ছেলে রাসেল।,
এর আগে শনিবার সকালে নিহত তোফাজ্জলের পরিবারের সাথে মামলা মোকদ্দমা নিয়ে পুর্ব বিরোধের জেরে ঘটনায় জড়িত সন্দেহে প্রথম দফায় গ্রামের কালা মিয়া ও তার ছেলে সেজাউল কবিরকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।,
আটক কালা মিয়ার ছেলে আটককৃত অপর সন্দেহভাজন সেজাউল কবিরের সাথে নিহত শিশু তোফাজ্জলের ফুফু শিউলি বেগমের বিয়ে হয়। নিহতের পরিবারের লোকজনের অভিযোগ বিয়ের পরে শিউলিকে নির্যাতন করে বাড়ি থেকে বের করে দেয় সেজাউল কবির। এ নিয়ে উভয় পরিবারের মধ্যে পুর্ব বিরোধ ও মামলা মোকদ্দমা চলাকালীন অবস্থায় গত ৮ জানুয়ারী নিখোঁজ হন শিশু তোফাজ্জল। এরপর তোফাজ্জলের পরিবারের অভিযোগের আঙ্গুল তুলেন কালা মিয়া ও তার ছেলে সেজাউল কবিরের প্রতি।
তারা তাদের অভিযোগে বলেন অপহরণের পর চিরকুট লিখে ৮০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করার পর মুক্তিপণ না দেয়ায় তোফাজ্জলকে হত্যা করা হয়। আর এবার হত্যার অভিযোগ নিহত তোফাজ্জলের ফুফু শিউলীর শশুড় কালা মিয়া ও জামাই সেজাউলের প্রতি।
নিখোঁজের চারদিন পর আজ শনিবার সকালে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর সীমান্তে বাশতলা গ্রামে বস্তাবন্দি অবস্থায় তোফাজ্জল হোসেন নামে সাত বছর বয়সী এক শিশুর লাশ সিমেন্টের বস্তায় বন্দি অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ।
সকালে উপজেলার চারাগাঁও সীমান্তের বাঁশতলা গ্রামে থাকা এক প্রতিবেশীর বাড়ির পেছন থেকে ওই শিশুর লাশ উদ্ধার করেন থানা পুলিশ।
নিহত তোফাজ্জল উপজেলার শ্রীপুর উওর ইউনিয়নের সীমান্ত গ্রাম বাঁশতলা গ্রামের জুবায়েল হোসেনের শিশু পুত্র ও বাঁশতলা দারুল হেদায়েত মাদ্রাসার প্রথম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। এ ব্যাপারে ঘটনাস্থলে থাকা তাহিরপুর থানার টেকেরঘাট পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ এএসআই মো. আবু মুসা শিশুর বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধারের তথ্য নিশ্চিত করে জানান.এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই গ্রামের কালা মিয়া ও তার ছেলে সেজাউল কবিরকে আটক করেছেন।,
পুলিশ ও নিহত শিশুর পারিবারীক সুত্র জানায়,উপজেলার সীমান্তগ্রাম বাঁশতলার জুবায়েল হোসেনের প্রথম শ্রেণিতে মাদ্রাসায় পড়ুয়া সাত বছর বয়সী শিশু পুত্র তোফাজ্জল হোসেন গত ৮ জানুয়ারী নিজ গ্রাম থেকেই নিখোঁজ হন।
নিখোঁজের পর অপহরন সন্দেহে পরদিন বৃহস্পতিবার ৯ জানুয়ারী পরিবারের পক্ষ হতে দাদা জয়নাল আবেদীন থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
পরবর্তীতে থানা পুলিশ ওই শিশুর সন্ধান পেতে দেশের সব থানায় তার বার্তা ও ই-মেইল প্রেরণ করেন।
অপরদিকে মামলা মোকদ্দমা ও পারিবারিক পুর্ব বিরোধের জের ধরে শিশু তোফাজ্জলকে অপহরণ পরবর্তীতে হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে এমন সন্দেহে উপজেলার বাঁশতলা গ্রামের কালা মিয়া ও তার ছেলে সেজাউল কবিরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে শনিবার ভোররাতেই টেকেরঘাট পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা আটক করে ফাঁড়িতে পরবর্তীতে থানায় নিয়ে যান।
এ ব্যাপরে তাহিরপুর থানার ওসি মো.আতিকুর রহমান বলেন, দু.দফায় ৯ জনকে এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।,
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপার (পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মো.মিজানুর রহমান জানান, পুলিশের দায়িত্বশীলরা আটককৃতদের নিবিড় পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রেখেছেন। তিনি আরো বলেন, যে কারনে অধিকতর তদন্ত ছাড়া কিংবা নিশ্চিত না হওয়া অবধি ওই শিশু অপহরন ও হত্যাকান্ডে কে বা কারা জড়িত রয়েছেন সে ব্যাপারে আপাতত কিছুই বলা সম্ভব হচ্ছেনা।,
উল্ল্যেখ যে, সম্প্রতি জেলার দিরাইয়ে ঘটে যায় দেশের বহুল আলোচিত শিশু তুহিন হত্যাকান্ড। তুহিন হত্যাকান্ডে শেষ অবধি বাবা চাচা ও পরিবারের লোকজনই দায়ি হন। প্রতিপেেক্ষের সাথে মামলা মোকদ্দমার জের, ফাঁসাতে গিয়ে বাবা চাচা ও পরিবারের লোজনই শিশু তুহিনকে হত্যা করেন নির্মমভাবে।