প্রতিনিধি ৬ জানুয়ারি ২০২০ , ১১:৫৩:০৬ অনলাইন সংস্করণ
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
হাওরের জেলা সুনামগঞ্জের সীমান্তবর্তী তাহিরপুর উপজেলার বৌলাই নদীতে একটি মানব নামের দানবচক্র অপরিকল্পিতভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করার কারনে একদিকে যেমন নষ্ট হচ্ছে ফসলী জমি এবং অন্যদিকে নদীর পাড়ে বসবাসরত বাড়িঘরসহ পরিবেশের ভারসাম্য রয়েছে হুমকির মুখে। পাশাপাশি নদীর বুক থেকে মাটি কাটার কথা থাকলেও এখন তা না করে নদীর পাড়ের ফসলী জমি কেটে বালুখেকো রাজু স্থানীয় শক্তিশালী বালু খেকো চক্রের সাথে আতাত করে নদীর পাড়ের ফসলী জমি কেটে নিচু জায়গা বরাট ও বালু বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিলে ও দেখার যেন কেহ নেই। কিন্তু সরকারী ভাবে ড্রেজারে নদী খননের মাটি ও বালি বিনা মূল্যে মসজিদ,মন্দির,সরকারী শিক্ষা প্রতিষ্টান,নীচু জায়গা,গর্ত ভরাট করার কথা থাকলে তা নামছে না এই চক্রটি। ফলে তারা অবৈধভাবে বালু ও মাটি উত্তোলন করে অল্পদিনেই আঙ্গুল ফুলে গলাগাছ বনে গেলেও বিষয়ে নজরে আসেনি প্রশাসনের উর্ধবতন কর্তৃপক্ষের।
এ নিয়ে নদী তীরবর্তী স্থানীয় গরীব লোকজন ক্ষতিগ্রস্থ হলেও ভূমিখেকো চক্রের ভয়ে কেহ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না। অন্যদিকে প্রশাসনের নীরব ভূমিকা নিয়ে ও তাদের মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
সরজমিনে স্থানীয় এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়,রাজু আহমেদ রাজু অটিবিএল কোম্পানীর দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিনিধি। এলাকায় বালু খেকো ড্রেজার রাজু হিসাবে পরিচিত। তিনি সরকারী নিয়ম বর্হিভূত ভাবে টাকার বিনিময়ে প্রশাসনকে বৃদ্ধাংঙ্গুলী দেখিয়ে সরকারী ড্রেজার দিয়ে স্থানীয় শক্তিশালী বালুখেকো চক্রের সাথে আতাত করে বৌলাই নদীতে অপরিকল্পীত ভাবে মাটি খননের কাজ করছেন। উত্তোলিত বালু ও মাটি কৌশলে বালুখেকো চক্রের সহযোগীতায় দীর্ঘদিন ধরেই উপজেলার দক্ষিনকুল, হোসেনপুর,সীমানা,মাহতাবপুর,পিরুজপুর,রসুলপুর,চিসকা গ্রামে মাটি ভরাটের নামে প্রতি শতাংশ ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকায় আবারো কোন কোন স্থানে আরো বেশী টাকা নিয়ে ভড়াট করার অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে এর পূর্বেও গত বছর (২০১৯সালে) রাজু তাহিরপুর থানার সামনে থেকে জামালগড় পর্যন্ত (মধ্য তাহিরপুর,উজান তাহিরপুর, সূর্যেরগাও,লক্ষীপুর, ধুতমা গ্রামে) নদী খননে একই পথ অবলম্বন করে কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় রাজু তা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবরও প্রকাশিত হয়। এরজন্য গত দুমাস পূর্বে অটিবিএল কোম্পানী তাহিরপুরের দায়িত্ব থেকে বিতারিত করে রাজুকে। বিতারিত হবার পর অটিবিএল কোম্পানীর দায়িত্বপ্রাপ্ত হন মাহতাব উদ্দিন তিনিও একই কায়দায় বালু ও মাটি কেটে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। কিন্তু রাজু আবারো টাকা কামানোর লোভে ফিরে এসেই সে বৌলাই নদী থেকে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন করে ফসলী জমি,নদীর পাড়ে বসবাসরত বাড়িঘর ও পরিবেশ হুমকির মূখে ফেলে বালু বরাটের কাজ করছেন টাকার বিনিময়ে চিসকা গ্রামে। আর যাদের বালু দিয়ে জায়গা ভরাট ও বিক্রি করছেন তাদের কাছ থেকে অলিখিত ভাবে গোপনে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা যেন দেখার কেউ নেই।
জানাযায়,বর্তমানে চিসকা গ্রামের উত্তর দিকে বৌলাই নদীর বুক থেকে মাটি না কেটে নদী সংলগ্ন ফসলী জমি কেটে দক্ষিন দিকে তাহিরপুর-আনোয়ারপুর সড়কে শনি হাওরের দিকে এক ফসলী বোরো জমি ও জায়গা ভরাট করছে টাকার বিনিময়ে আর বালু মজুদ করে রাতের আধারে পাঠাচ্ছে অন্যত্র। গোপন সূত্রে ও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক বাসীন্দা জানায়,শনি হাওরের বোরো ফসলী জমিতে মাটি ভরাটের জন্য শাহদত মিয়া,মিজার্ আশরাফ এরশাদের কাছ থেকে দুই লাখ টাকা চুক্তি করেছে ড্রেজার রাজু। আর অপরিকল্পীত ভাবে মাটির ভরাটের কারনে চাষযোগ্য জমি নষ্ট হচ্ছে অভিযোগ করেছেন ক্ষতিগ্রস্থরা। যে এই বিষয়টি প্রকাশ করবে তার মাটি বরাট বন্ধ ও মামলাসহ নানান ভাবে ভয় দেখায়।
ফলে হয়রানীর শিকার হবার আশংকায় কেউ মুখ খুলতে নারাজ। আর স্থানীয় শক্তিশালী মহল ও প্রশাসন ম্যানেজ করছে অটিবিএল কোম্পানীর দায়িত্বপ্রাপ্ত্য রাজু আহমেদ নিজেই তার সহযোগী বালখেখুদের নিয়ে আব্দুস ছাত্তার,শফিক,বাচ্ছু,শামসু মিয়াসহ স্থানীয় অনেকেই জানান। তারা আরো জানান,আমরা চাই সরকারি বরাদ্দের টাকা যাতে যথাযথভাবে জনকল্যাণে ব্যয় হয়। নদী খননের উদ্যোগ নেওয়ায় আমরা খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু বাস্তবে দেখছি নদীতে কাজ শুরু করেছে টাকার বিনিময়ে। এতে খনন কাজের সততা নিয়ে এলাকাবাসীর মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এছাড়াও এখন নদীর বুক থেকে মাটি না কেটে নদীর ধারে ফসলী জমি কাটা হচ্ছে।
আব্দুন নূর,মিয়া হোসেনসহ স্থানীয় লোকজন বলেন, অটিবিএল কোম্পানীর প্রতিনিধি রাজু আহমেদ টাকার বিনিময়ে বালু ও মাটি দিয়ে গর্ত ও নিচু জমি বরাট করছে দালাল ও বালু খেকু চক্রের সহযোগীতায়। টাকা না দিলেই মাটি বলেন আর বালু বলেন সব বন্ধ। মামলাসহ নানান ভাবে ক্ষতি করার ভয় দেখায়। ফলে গরীব,অসহায়,হতদরিদ্ররা তাদের বিরোদ্ধে কিছু বলার মত সাহস পায় না।
এ ব্যাপারে অটিবিএল কোম্পানীর প্রতিনিধি রাজু আহমেদ রাজু বলেন,আমি চলে যাবার পর কোম্পানীর দায়িত্বপ্রাপ্ত মাহতাব উদ্দিন স্থানীয় কিছু বালু খেকু চক্রের সাথে আতাত করেছিল। যার জন্য কিছু সমস্যা হয়েছিল। এখন আমি সব মেনেজ করে চলেছি। আমি আবারও এসেছি সব ঠিকঠাক করে চালাবার জন্যই। আপনারা ইউএনও এমপিকে জিজ্ঞাসা করেন কোন ক্ষতি হচ্ছে কি না।
এ ব্যাপারে তাহিরপুর উপজেলা নিবার্হী কর্মকতার্ বিজেন ব্যানার্জি বলেন,এই বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোন অনিয়মকে ছাড় দেওয়া হবে না।