• আইন আদালত/সাজা

    তাহিরপুরে প্রতিপক্ষ’কে ফাঁসাতে শিশু তোফাজ্জলকে হত্যা! গ্রেফতার কৃতরা কারাগারে

      প্রতিনিধি ১৭ জানুয়ারি ২০২০ , ১০:০৯:০৬ অনলাইন সংস্করণ

    সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ তাহিরপুরে সাত বছরের শিশু মাদরাসাছাত্র তোফাজ্জলকে অপহরণের পর হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহভাজন সাত আসামির রিমান্ড শেষে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
    বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) বিকেলে সুনামগঞ্জ আদালতে থাকা ইন্সপেক্টর (ওসি) মো. আশেক সুজা মামুন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
    সাত আসামি হলেন— উপজেলার বাঁশতলা গ্রামের জয়নাল আবেদীনের মেয়ে নিহত তোফাজ্জলের ফুফু শিউলি, তার সহোদর সালমান হোসেন, লোকমান হোসেন হাবিবুর রহমান হবি, চাচা সারোয়ার হাবিব রাসেল, শিউলির শ্বশুর কালা মিয়া, জামাই সেজাউল কবির।
    তোফাজ্জলকে হত্যায় নিজের সম্পৃক্ততা থাকার বিষয়ে নিহতের নিকটাত্মীয় (দাদা) আসামি সারোয়ার হাবিব রাসেল মঙ্গলবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এরপর আদালত তাকে জেলা কারাগারে পাঠান।
    আসামি রাসেল সম্পর্কে নিহত তোফাজ্জলের দাদা জয়নাল আবেদীনের ফুফাত ভাই ও প্রতিবেশী।
    পুলিশের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, রিমান্ডে রাসেল জানায়, শুক্রবার দিবাগত রাতে শিশু তোফাজ্জল তার (রাসেল) ঘরে ঘুমিয়ে ছিল। ভয়ে চিৎকার করলে তোফাজ্জলকে বালিশ চাপায় শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। পরে এক পা ও এক চোখ উপরে ফেলে বস্তাবন্দি করে প্রতিবেশীর বাড়ির পেছনে ফেলে রাখা হয় অন্যদের ফাঁসাতে।
    রিমান্ডের পূর্বেই থানা পুলিশ রাসেলের শয়নকক্ষের বক্সখাটের ড্রয়ার হতে রক্তমাখা ভেজা লুঙ্গি, সোফার ওপর থাকা বালিশের দুটি রক্তমাখা তোয়ালে, বিছানার নিচে রাখা চিরকুট লেখা খাতার অবশিষ্ট অংশ ও শনিবার লাশ উদ্ধারের সময় লাশের পাশে থাকা অপর একটি সিমেন্টের বস্তায় রাখা ৬টি ইট আলামত হিসাবে জব্দ করেন।
    অপরদিকে রিমান্ডে থাকা ফুফু শিউলি ও দুই চাচাসহ ৬ আসামিকে বুধবার ফের জেলা কারাগারে প্রেরণ করেন আদালত।হ
    তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টায় মামলার তদন্তকারী অফিসার তাহিরপুর থানার ওসি মো. শফিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনোপ্রশ্নের উত্তর না দিয়ে গণমাধ্যমকে বলেন, তদন্তকাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
    বৃহস্পতিবার রাতে নিহতের পিতা জুবায়ের হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, রাসেলসহ যে বা যারাই আমার অবুঝ শিশু পুত্র অপহরণ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকুক না কেন তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দাবি করছি। এমন দৃষ্টান্তমূলক বিচার হোক যাতে ভবিষ্যতে তোফাজ্জলের মতো আর কোনো শিশুকে এমন বর্বর হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে না হয়।
    এ দিকে শিশু তোফাজ্জলকে অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড ও দ্রুত বিচারের দাবিতে বৃহস্পতিবার তাহিরপুর উপজেলা সদরে, জেলা সদরে ‘খেলাঘর আসর’ নেতৃবৃন্দ ও সংগঠনের সদস্যরা পৃথক পৃথক মানববন্ধন করেন।
    বৃহস্পতিবার রাতে সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান পিপিএম বলেন, যেহেতু অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডে নিজের সম্পৃক্ততা থাকার বিষয়ে রাসেল স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে, তাই অন্যদের রিমান্ডে রাখার যৌক্তিক কারণ না থাকায় বুধবার তাদের আদালতে হাজির করা হয়।
    প্রসঙ্গতঃ গত ৮ জানুয়ারি বিকেলে উপজেলার চারাগাঁও সীমান্তের বাঁশতলা গ্রাম হতে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয় গ্রামের জুবায়ের হোসেনের শিশুপুত্র তোফাজ্জল।

    আরও খবর

    Sponsered content