প্রতিনিধি ১৯ জানুয়ারি ২০২০ , ১২:৫৭:২১ অনলাইন সংস্করণ
নীলফামারী প্রতিনিধি।। নীলফামারীর ডিমলা থানার ওসি মো. মফিজ উদ্দিন শেখ এবার বাংলাদেশ উম্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন।
জলঢাকা উপজেলা শহরের অনির্বান উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে শুক্রবার তিনি বাংলা দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। ওইদিনই পরীক্ষা শুরু হয়েছে।
থানার ওসির এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের বিষয়টি আলোচিত হচ্ছে এলাকায়।
পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা স্বীকার করে মফিজ উদ্দিন বলেন, “আমি অষ্টম শ্রেণি পাশ করে কনস্টেবল হিসেবে পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করি। পরে বিভাগীয় (ডিপার্টমেণ্টাল) পরীক্ষায় অংশ নিয়ে কনস্টেবল থেকে পদোন্নতি পেয়ে পর্যায়ক্রমে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হয়েছি।
“আমার ইচ্ছা আমি শুধু এসএসসি নয়, বাংলাদেশ উম্মুক্ত বিশ্ব বিদ্যালয়ের অধীনে স্নাতকোত্তর করতে চাই।”
উচ্চশিক্ষায় আগ্রহী হয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রশংসা পাওয়া এই কর্মকর্তা ভবিষ্যতে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর করারও আশা প্রকাশ করেছেন।
পরীক্ষার কেন্দ্র সচিব জলঢাকা অনির্বান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. রোকনুজ্জামান চৌধুরী বলেন, অষ্টম শ্রেণি পাশ সনদ দেখিয়ে ২০১৭ সালে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে নবম শ্রেণীতে ভর্তি হন ডিমলা থানার ওসি মফিজ উদ্দিন শেখ।
“২০১৮ সালে তিনি এসএসসি প্রথম সেমিস্টার পরীক্ষায় পাশ করেছেন। এরপর চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া দ্বিতীয় সেমিস্টার পরীক্ষায় অংশ নেন।”
রোকনুজ্জামান জানান, ওই কেন্দ্রে দ্বিতীয় সেমিস্টারে মফিজ উদ্দিন শেখসহ ৯৫ জন পরীক্ষার্থী থাকলেও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছেন ৭৭ জন।
মফিজ উদ্দিন ভর্তি হওয়ার সময় তার সার্ভিস বুক এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতিপত্র জমা দিয়েছিলেন বলে কেন্দ্র সচিব রোকনুজ্জামান জানান।
ওসি মফিজ উদ্দিন শেখ জানান, ২০১৭ সালের ১৭ মার্চ তিনি ডিমলা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হিসেবে যোগদান করেন। পরবর্তীতে ২০১৮ সালের ২০ মে তিনি ডিমলা থানার ওসি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করে ওই পদে বহাল আছেন।
তিনি বলেন, “আমি তো আমার শিক্ষাগত যোগ্যতা সার্ভিস বুকে অষ্টম শ্রেণি পাশ দেখিয়েছি। এখানে লুকোচুরির কিছুই নাই। পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্যও ছুটি নিয়েছিলাম আমি।”
এ ব্যাপারে নীলফামারীর পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন বলেন, ডিমলা থানার ওসি মফিজ উদ্দিন শেখ অষ্টম শ্রেণি পাশ করে পুলিশের কনস্টেবল পদে যোগদান করেন। পরে বিভাগীয় পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পদোন্নতি পেয়ে ওসি হয়েছেন। তিনি অনুমতি ও ছুটি নিয়ে উম্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পরীক্ষা দিচ্ছেন। “পড়াশোনা করতে দোষ কিসের! এটাকে আমরা ইতিবাচক দিক হিসেবে দেখছি।”