প্রতিনিধি ৩০ ডিসেম্বর ২০১৯ , ৪:০০:১৬ অনলাইন সংস্করণ
বাম্পার ফলনের পরও লোকসানের মুখে ঠাকুরগাঁওয়ের আগাম আলু চাষীরা
ঠাকুরগাঁও থেকে মাহমুদ আহসান হাবিব।। গম ও আমন ধানের লোকসানের পর এবার আগাম জাতের আলুতেও বড় ধরনের লোকসানের মুখে ঠাকুরগাঁওয়ের চাষীরা। বর্তমানে বাজারে পুরোনো আলুর সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকায় নতুন আলুতে চাহিদা কম দেখাচ্ছেন ক্রেতারা। আর এ কারনেই ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে দাবি এলাকার কৃষকদের।
এ অঞ্চলের লাভজনক ফসল হিসেবে আলু বেশ পরিচিত। জেলার বালিয়াডাঙ্গি, পীরগঞ্জ, রানিশংকৈল, হরিপুর ও সদর উপজেলা সহ ৫ উপজেলারই মাটি আলু চাষে উর্বর হওয়ার কারণে প্রতি বছর অধিক লাভের আশায় দুই ধাপে আলু চাষ করে এ এলাকার কৃষকেরা। প্রথম ধাপের আলু চাষ শুরু হয় আশ্বিন মাসের প্রথম সপ্তাহেই এই এলাকায়। আগাম জাতের ধান কাটার অল্প সময়ের ব্যাবধানেই আগাম জাতের আলু চাষ করা হয় সেসব জমিতে ।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এবার আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ হাজার ৫০০ হেক্টর জমি। এর মধ্যে আগাম জামের আলু চাষ করা হয়েছে ২০ হাজার হেক্টর জমিতে। মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টিতে কিছু জমির আলু নষ্ট হলেও পরে আর কোন ক্ষতির সম্মুখিন হয়নি চাষীরা। এ জন্য আলুর বাম্পার ফলনের দাবি কৃষি অধিদপ্তরের।
সদর উপজেলার আলু চাষী কাইয়ুম উদ্দিন জানান, দুই একর জমিতে আলু চাষ করতে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এর মধ্যে আগাম জাতের এক একর জমির আলু বিক্রি করেছি সত্তর হাজার টাকা। দিন দিন আলুর দাম কমতে শুরু করেছে। শেষ পর্যন্ত পুজি টুকুও উঠবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
পীরগঞ্জ উপজেলার আলু চাষী মোতালেব জানান, বাজারে এখনও পুরাতন আলুর সরবরাহ পর্যাপ্ত রয়েছে। পুরাতন আলুর দাম কম হওয়ায় ক্রেতারা পুরাতন আলুতেই বেশি ঝুঁকছে। সে কারণে নতুন আলুর চাহিদা কমেছে বাজার গুলোতে। এ জন্য আলু চাষীদের লোকসানের মুখ দেখতে হচ্ছে।
বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত সপ্তাহে আগাম বিদেশি জাতের আলু প্রতিমণ ৬’শ টাকা বিক্রি হলেও প্রতিমণে ১শ থেকে দেড়শ টাকা
বেড়ে বর্তমানে আলুর মণ ৭-৮’শ টাকা বিক্রি হচ্ছে। যেখানে প্রতি বছরই আগাম আলু ১ হাজার টাকা থেকে দেড় হাজার টাকা বিক্রি হতো।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ আফতাব উদ্দীন জানান, আলুর বাজার দর কিছুদিন কম থাকলেও আবারও কেজি প্রতি ২-৪ টাকা করে বেড়েছে। ভাল ফলন হয়েছে আলুর। আমরা আশাবাদি, আলুর দামটা কিছুটা বাড়লেই লোকসানের মুখ দেখতে হবেনা কৃষকদের।