• লিড

    রুহিয়ায় ডিজিটাল চেক জালিয়াতি, ৩৩ লক্ষ টাকা গায়েব!

      প্রতিনিধি ২৪ ডিসেম্বর ২০১৯ , ৮:৪৫:৩৯ অনলাইন সংস্করণ

    মাহমুদ আহসান হাবিব ঠাকুরগাঁও: বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ইতিপূর্বে ইস্যুকৃত বিভিন্ন সার্কুলার ও গাইড লাইনের আলোকে চেকের জাল জালিয়াতি রোধে বিভিন্ন নির্দেশনা প্রদান করা সত্বেও, অত্যন্ত উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, চেক জালিয়াতির মাধ্যমে গ্রাহকের হিসাব থেকে বিরাট অংকের অর্থ আত্মসাতের ঘটনা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। উন্নত প্রযুক্তি, অনলাইন লেনদেন, ইমেইল এর অপব্যবহার এবং গ্রাহকের সরলতার সুযোগ নিয়ে একটি সংঘবদ্ধ চক্রের দ্বারা নগদ, ক্লিয়ারিং ও ট্রান্সফার চেকের মাধ্যমে গ্রাহকের অর্থ আত্মসাতের ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। বিশেষ করে প্রবাসী গ্রাহকের ক্ষেত্রে চেক টেম্পারিং, স্বাক্ষর জাল, ভূয়া ই-মেইলে এর মাধ্যমে সুপরিকল্পিত ভাবে জালিয়াতির ঘটনা ঘটছে। প্রকৃত আমানতকারী গ্রাহক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে এবং ব্যাংকের সুনাম ও ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে।

    জনতা ব্যাংক লিমিটেড, রুহিয়া শাখা হতে ইতি আকতার নামে এক নারী তার ব্যাংক একাউন্ট হতে (হিসাব নং- ০১০০১৪৯২৭৪৯৮১) যথাক্রমে ৩টি চেকের মাধ্যমে (গত নভেম্বর মাসের ২১, ২৬ এবং ১ ডিসেম্বর) ৩২ লক্ষ ৭১ হাজার ৬ শত ২৭ টাকা উত্তোলন করেছে। যার সমূদয় টাকা ফেরৎ চেয়ে ইতোমধ্যে ইতি আকতার কে একটি নোটিশ জনতা ব্যাংক লিমিটেড রুহিয়া শাখার পক্ষ থেকে প্রদান করা হয়েছে ( নোটিশ সূত্র নং এসসিআর/মোছা: ইতি আকতার/স:হি: ০১০০১৪৯২৭৪৯৮১/২০১৯)। উক্ত নোটিশের আলোকে জানা যায়, রুহিয়া ইউনিয়নের পূর্ব কুজিশহর গ্রামের হাবিবুর রহমানের (বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে গত ১ বছর জাতিসংঘের মিশনে কর্মরত) স্ত্রী ইতি আকতারের হিসাবের অনুকূলে ক্লিয়ারিং হাউজের মাধ্যমে আইএফআইসি (IFIC) ব্যাংক লিমিটেড শান্তিনগর শাখা, ঢাকা হতে আদায়কৃত ৩টি চেকের মাধ্যমে নগদায়নের ভিত্তিতে ৩২,৭৭,০০০/- টাকার মধ্যে ৩২,৭১,৬২৭/- টাকা উত্তোলন করে। পরবর্তীতে আইএফআইসি ব্যাংক উক্ত চেক ৩টি কে জাল বলে সনাক্ত করে উক্ত টাকা উত্তোলনে জনতা ব্যাংক লিমিটেড, লোকাল ব্যাংক ঢাকা অফিসের মাধ্যমে জনতা ব্যাংক লিমিটেড রুহিয়া শাখাকে বিষয়টি অবহিত করেন এবং টাকা উত্তোলনের অনুরোধ জানান। এরই সূত্র ধরে জনতা ব্যাংক রুহিয়া শাখা ব্যবস্থাপক সুবাস চন্দ্র রায় স্বাক্ষরিত একটি নোটিশ ইতি আকতারকে প্রদান করা হয়। উক্ত নোটিশ মোতাবেক ইতি আকতারকে উত্তোলণকৃত ৩২,৭১,৬২৭/- টাকা তার নিজস্ব হিসাব নম্বরে জমা করার জন্য অনুরোধ করা হয়।

    এ ব্যাপারে ইতি আকতারের নিকট জানতে চাইলে সে জানায়, আমি তাকে চিনতাম না, গত দেড় মাস আগে অপরিচিত নাম্বারে তার সাথে আমার পরিচয়, তিনি বলেছিলেন, আমি ঠিকাদার, ঠাকুরগাঁওয়ে একটি কাজ পেয়েছি, আপনার একাউন্টে কিছু টাকা পাঠাবো টাকাটা আমাকে তুলে দিতে হবে। আমি ভেবেছি, যদি তার উপকার হয় তাই আমার হিসাব নম্বর থেকে উত্তোলণ করে দিয়েছি। কিন্তু চেক জালিয়াতি করবে আমি জানতাম না।

    ১ম চেকটি আমি নিজে প্রদান করলেও পরবর্তী ২টি চেক ঐ ব্যক্তি নিজে জমা করে। জনতা ব্যাংক লিমিটেড রুহিয়া শাখার ম্যানেজার আমাকে ফোন দিয়ে ডেকে নেয় পরবর্তী চেক ২টি স্বাক্ষরের জন্য। আমি ম্যানেজারের অনুরোধে উক্ত চেক ২টি স্বাক্ষর করি।

    জনতা ব্যাংক লিমিটেড, রুহিয়া শাখার ব্যবস্থাপক সুবাস চন্দ্র রায়কে চেক কথায় পেয়েছে জানতে চাইলে তিনি জানান, ডাকযোগে আসতে পারে, আমি সেদিন জরুরী কাজে দিনাজপুর ছিলাম।

    জনতা ব্যাংক লিমিটেড, ঠাকুরগাঁও কর্পোরেট শাখার ব্যবস্থাপক মোঃ মনজুলুর রহমান বলেন, আমাদের কিছু জানা নেই, বিষয়টি সংশ্লিষ্ট আইএফআইসি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বলতে পারবে।

    আরও খবর

    Sponsered content