প্রতিনিধি ১ ডিসেম্বর ২০১৯ , ৯:৪৬:০২ অনলাইন সংস্করণ
ডিসেম্বর মহান বিজয়ের মাস। আজ পহেলা ডিসেম্বর, একাত্তরের এই মাসে শুরু হয়েছিল বিজয় আর গৌরবে মুক্তিকামী মানুষের পথচলা।
দীর্ঘ নয় মাস পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশের অভু্যদয় ঘটে। পাকিস্তানি শাসন থেকে মুক্ত হওয়া এই মহান বিজয়ের মাস একদিকে যেমন পরম আনন্দের, একই সঙ্গে স্বজন হারানোর শোকার্ত মাসও।
এবারের ডিসেম্বরের মাস উদযাপনের মধ্য দিয়ে বিজয়ের ৪৮ বছর পূর্ণ হবে। এ মাসেই জাতির বহু ত্যাগের ফসল হাজার বছরের স্বপ্ন পূরণ হয়। তাছাড়া, ডিসেম্বর মাসেই চূড়ান্ত বিজয়ের দুই দিন আগে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি ও তাদের দোসর রাজাকার আল-বদরদের হাতে শহীদ হন দেশের বুদ্ধিজীবীরা। বিজয়ের আনন্দের পাশাপাশি সেসব শহীদ বুদ্ধিজীবীর প্রতি এ মাসেই কৃতজ্ঞ জাতি গভীর শ্রদ্ধা জানাবে।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধা, গেরিলা আর ভারতীয় মিত্র বাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত যৌথ বাহিনীর সাঁড়াশি আক্রমণের মুখে বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয় এবং এর মধ্য দিয়ে নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। আর জাতি অর্জন করে স্বপ্নের স্বাধীনতা।
এর আগে বাঙালি জাতির আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার অর্জনের দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের সোপান বেয়ে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ রেসকোর্স
(বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) ময়দানে জাতির অবিসংবাদিত নেতা, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’-এ ঘোষণার পরপরই গোটা জাতি মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত প্রস্তুতি গ্রহণ করে। ‘৭১ -এর ২৫ মার্চ কালো রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির উপর অতর্কিতে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে হাজার হাজার মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৭১’ এর ২৫ মার্চ রাতে পাকবাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হবার আগে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন এবং তার ডাকে সাড়া দিয়ে বাঙালি জাতি ঐক্যবদ্ধভাবে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন।
দীর্ঘ ৯ মাসের সশস্ত্র যুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদ এবং ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানির মধ্য দিয়ে ১৬ ডিসেম্বর জাতির চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়।
মাসব্যাপী উৎসাহ-উদ্দীপনায় এবং নানা কর্মসূচির মাধ্যমে স্বাধীনতার পক্ষের মানুষ পালন করবে বিজয়ের মাসটি। প্রতিদিনই নানা কমর্সূচির মাধ্যমে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালার মাধ্যমে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য আত্মোৎসর্গকারী শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণ করবে এবং তাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করবে।