প্রতিনিধি ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯ , ১২:৩৪:২৯ অনলাইন সংস্করণ
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:- সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার দোলারবাজার ইউনিয়নের বারগোপী গ্রামের আমেরিকান প্রবাসী শফিক মিয়ার বাড়ির সীমানা প্রাচীর জোরপূর্বক ভাঙার চেষ্টা নিয়ে সৃষ্ট ঘটনায় পাল্টা অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় গত ৪ ডিসেম্ভর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, সুনামগঞ্জ বিবিধ মোকদ্দমা নং ৪২০/১৯ইং দায়ের করেন শফিক মিয়া। এতে একই গ্রামের মৃত. নিম্বর আলীর ছেলে জমির উদ্দিন ও মৃত. মোছন আলির ছেলে আব্দুল হদিশকে আসামী করা হয়।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, শফিক মিয়া প্রায় ১১ বছর যাবৎ স্বপরিবারে আমেরিকায় বসবাস করছেন। সম্প্রতি তিনি দেশে ফিরে তার নিজ গ্রামের বাড়ীতেই বসবাস করছেন। তার বাড়ির পূর্বে পাটিয়ার খাল অবস্থিত। তৎসময়ে স্থানীয় জনসাধারনের চলাচলের জন্য কাছা রাস্তা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হলে পাটিয়ার খাল (ভরা) তীর ও শফিক মিয়ার বাড়ির সীমানা দিয়ে গ্রামীণ কাছা রাস্তা করার উদ্যোগ নেন স্থানীয়রা। তার বাড়ির পশ্চিম সীমানা অথাৎ দক্ষিন থেকে উত্তর অংশ একটু আড়া-আড়ি রয়েছে। জনসাধারনের যাতায়াত সুবিদার কথা বিবেচনা করে বাড়ির দক্ষিন অংশে ৩৬ ফুট জায়গা দিয়ে উত্তর অংশে বাড়ির সীমানা প্রাচীর সোজা করার জন্য ৬ ফুট জায়গা মৌখিক ভাবে বিনিময় করেন শফিক মিয়া। তৎসময়েও মধ্যখানে অর্ধেক সীমানা প্রাচীর নিমার্ন করা ছিল। সম্প্রতি তিনি বাড়িতে ফিরে সৈন্দযর্য বৃদ্ধির জন্য অবশিষ্ট সীমানা প্রাচীর নিমার্ন কাজ সম্পন্ন করেন। পারিবারিক বিরোধের জের ধরে একটি মহল তার বাড়ীর নির্মিত সীমানা প্রাচীর ভাঙার চেষ্টা করছে অভিযোগও রয়েছে।
জানা যায়, বারগোপী গ্রামস্থ পঞ্চায়েতি কবর স্থানের উত্তর দিকে পাইত্তার খালে পূর্ব পারের খেলার মাঠে গত ২৪ নবেম্ভর ২০১৮ ইং তারিখে হাজী লুৎফুর রহমান ও জমির উদ্দিন গংদের মধ্যে এক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে মিজানুর রহমান নামে একজন গুলিবিদ্ধ হন। এ ঘটনায় প্রবাসী শফিক মিয়ার স্ত্রীর বড় ভাই লুৎফুর রহমান বাদী হয়ে ২৬ নবেম্ভর.২০১৮ ইং তারিখে ছাতক থানায় মামলা নং ১৭ দায়ের করেন। এতে জমির উদ্দিন ও আব্দুল হদিশ সহ ৪৭জনকে আসামী করা হয়। এ ঘটনায় জমির উদ্দিন মাস খানেক জেলহাজতেও ছিলেন। তবে পাশ্বভতর্ী অন্যন্য সীমানা প্রাচীর উচ্ছেদ না করে শুধুমাত্র প্রবাসী শফিক মিয়ার বাড়ির সীমানা প্রাচীর উচ্ছেদ নিয়ে সৃষ্ট ঘটনায় স্থানীয়দের মনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে আব্দুল হদিশ ও জমির উদ্দিন জানান, ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যগণের উপস্থিতিতে খুঁটি মেরে দেওয়া হয়েছেন। শফিক মিয়া অমান্য করে ৬-৭ ফুট জায়গা বেশি নিয়ে দেয়াল নিমার্ন করেছেন। তারা আরও বলেন বাড়ির দক্ষিন অংশে ৩৬ ফুট জায়গা মৌখিক ভাবে বিনিময়ের কোন আলোচনা বা সমঝোতা হয়নি।
প্রবাসী শফিক মিয়া বলেন, এই বাড়িটি আমি উত্তরাধিকারী সুত্রে মালিক ও দখলকার বটে। দক্ষিন অংশে ৩৬ ফুট জায়গা দিয়ে উত্তর অংশে সীমানা প্রাচীর সোজা করার জন্য ৬ ফুট জায়গা মৌখিক ভাবে বিনিময় করেছি। আমি আদালতে মামলাও দায়ের করেছি। তিনি আরও বলেন, পাশ্বভতর্ী অন্যন্য সীমানা প্রাচীরের দিকে থাকালে বুঝা যায় আমার আমার বাড়ির সীমানা প্রাচীর অন্যন্য সীমানা প্রাচীরের সোজা রয়েছে। বাড়ীর উত্তর থেকে দক্ষিনে বাজার পর্যন্ত যে সীমানা প্রাচীর নিমার্ন করা হয়েছে আমি এর ব্যতিক্রম না। সম্প্রতি পারিবারিক বিরোধের জের ধরে একটি মহল শুধু মাত্র আমার সীমানা প্রাচীর ভাঙার ষড়যন্ত্র করছে। ভাঙতেই যদি হয় সকলের ভাঙতে হবে।
দোলারবাজার ইউপি চেয়ারম্যান সায়েস্তা মিয়া জানান, ইউপি সদস্যবৃন্দ ও স্থানীয় মুরব্বিয়ানদের উপস্থিতিতে আমরা খুটিঁ মেরে দিয়ে এসেছি। কিন্ত শফিক মিয়া তা মানেন নাই। তিনি আরো বলেন, ইতোমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) তাপস শীল।
অ্যাডভোকেট বোরহান উদ্দিন মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আদালত তদন্তের জন্য ছাতক উপজেলা সহকারি কমিশনার(ভূমি)কে আদেশ করেছেন।
পাশা-পাশি বিবাদীগণকে শোকজ করেছেন আদালত। আগামী ১৯ জানুয়ায়ী ২০২০ ইং তারিখে শুনানী অনুষ্টিত হবে।
ছাতক উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) তাপস শীল জানান, শুনেছি আদালতে একটি মামলা হয়েছে। তবে আদেশ এখনো হাতে পৌছায়নি।