প্রতিনিধি ১১ ডিসেম্বর ২০১৯ , ১১:৫৭:৫৮ অনলাইন সংস্করণ
কুলেন্দু শেখর দাস, সুনামগঞ্জঃ
হাওরের জনপদ সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের মৌলা নদীর উপর দীর্ঘদিন পরে নির্মিত হচ্ছে স্বপ্নের সেই সেতু জনতা ব্রীজ । ধন মিয়া মেম্বার ও গ্রামবাসীর নিজস্ব অর্থায়নে ও উগ্যোগে শুরু হয়েছে ১২০ ফিট লম্বা ব্রিজের নির্মাণ কাজ।
বুধবার বিকেলে এলাকাবাসী স্বপ্নের জনতা ব্রীজের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন এলাকাবাসী। এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, কলোনী গ্রামের জন্মলগ্ন থেকে এই গ্রামটি আশেপাশের গ্রামগুলো থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন একটি জনপদ ছিল। কলোনী গ্রামে কোন স্কুল- কলেজ, মাদ্রাসা , হাসপাতাল , হাঁট বাঁজার না থাকায় প্রতিদিন বাঁশের সাকোঁ দিয়ে এখানকার লোকজন জীবনের ঝুকিঁ নিয়ে উপজেলা শহরে আসতে হতো তাদের। স্বাধীনতা পরবর্তী জাতীয় ও স্থানীয় নিবার্চনে অনেক জনপ্রতিনিধিরা নিবার্চনীূ বৈতরণী পার হওয়ার জন্য এই নদীতে সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিলেও নিবার্চনের পর আমূল ভুলে যেতেন এই জনপ্রতিনিধিরা।
ফলে এই গ্রামের মানুষজনের একটি সেতু নিমার্ণ যেন স্বপ্নের মতোই ছিল দীর্ঘদিন। গ্রামটির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এ পর্যন্ত নদীটির উপর কোন ধরনের ব্রীজ বা সেতু তৈরি করা হয়নি। যার কারণে কলোনী গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ ও কোমলমতি ছাত্রছাত্রীরা বাশঁতলা চৌধুরীপাড়া শহীদস্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়, ইসলামপুর ছিদ্দিকিয়া দাখিল মাদ্রাসা, কলাউড়া ফাজিল মাদ্রাসা, বড়খাল স্কুল এন্ড কলেজ ও চৌধুরীপাড়া বাজার,হকনগর বাজার বাংলাবাজার ও বগুলা বাজারে প্রতিনিয়ত আসা যাওয়া জন্য জীবনের ঝুকিঁ নিয়ে বাশেঁর সাকো পারাপারে তাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হত। কলোনী গ্রামের মানুষ মৌলা নদীর উপর দিয়ে বাঁশের তৈরী সাকোঁ দিয়ে দীর্ঘদিন যাবত যাতায়াত করে আসছে। এটাই ছিল গ্রামবাসীর বাজার কিংবা স্কুলে আসার সহজ রাস্তা। সাকোঁ উপর দিয়ে স্কুল কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা ও অসুস্থ রোগীদের নিয়ে আসা যাওয়া করতে অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হত নিয়মিত। অনেক সময় স্কুল কলেজে যাওয়া আসার সময় বই খাতা নিয়ে প্রায় পানিতে পড়ে যায় শিক্ষার্থীরা।
তবে এলাকাবাসীদের যাতাতের এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পথ হওয়ায় সবাই এই নদীর উপর বাশেঁর তৈরী সাঁকোঁ দিয়ে যাতায়াত করতে বাধ্য হত।
প্রতি বছর বাঁশ দিয়ে সাঁকোঁ তৈরিতে হাজার হাজার টাকা নষ্ট করতে হতো। তাই এবার স্থানীয় ইউপি সদস্য ধন মিয়া ও গ্রামাবাসী সবাই চাদাঁ উত্তোলন করে স্বউদ্যোগে এই নদীতে জনতা ব্রীজ নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করা হলো।
এলাকাবাসী এই ব্রীজের নাম দিয়েছেন স্বপ্নের জনতা ব্রীজ। প্রাথমিক অবস্থায় প্রায় ১০ লক্ষ টাকা খরচ করে ১২টি পিলার স্থাপনের মধ্যে দিয়ে কাজ শুরু করা হলো। আজকে প্রথম পিলারের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপনের মধ্য দিয়ে শুরু হলো এই ব্রীজের কাজটি। এই ব্রীজটি সম্পন্ন করতে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য ধন মিয়া। তিনি বলেন,এই মহান কাজে স্থানীয় এমপিসহ জনপ্রতিনিধিরা যদি এগিয়ে আসলে হয়তো তাদের যাতায়াতের স্বপ্নের জনতা ব্রিজটির নির্মাণ কাজ আরো সহজে সম্পন্ন করা যেত। তিনি প্রবাসী, বিত্তবান, দানশীলসহ সবাইকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।
ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন অনুষ্ঠানে এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইউপি সদস্য ধন মিয়া,সাবেক মেম্বার সুরুজ ভুঁইয়া, সাংবাদিক এম এ মোতালিব ভুঁইয়া, সমাজসেবক হাজী জুনাব আলী, মাহমদ আলী, কবির সরকার,মজি মিয়া,দরবেশ আলী,বদরুল ইসলাম,সুজন মিয়া, হুসেন মিয়া,নুরুল ইসলাম খা, জামাল মিয়াসহ গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিগন প্রমুখ।