• রাজনীতি

    সুনামগঞ্জে মুকুট-মানিক বিভেদ তুঙ্গে, সংঘাতের আশংকা

      প্রতিনিধি ২৪ নভেম্বর ২০১৯ , ১:৫৩:০৭ অনলাইন সংস্করণ

    স্টাফ রিপোর্টারঃ-
    সুনামগঞ্জে মুকুট-মানিক বিভেদ এখন তুঙ্গে! যেকোনো সময় ঘটতে পারে অঘটন।
    ইতিমধ্যে দোয়ারা বাজারে মুকুটের বিরুদ্ধে মানিক গ্রুপের সমাবেশে মুকুট অনুসারী জেলা আওয়ামী লীগ নেতা শামীম চৌধুরীর গ্রুপের নেতাকর্মীদের বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে সংঘটিত সংঘর্ষে উভয় গ্রুপের ১৫ আহত হয়েছেন এর মধ্যে গুরুতর আহত কয়েকজন সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এছাড়াও ছাতকের বিভিন্ন ইউনিটে মানিক অনুসারীরা প্রায় প্রতিদিনই মুকুটের বিরুদ্ধে মিছিল-সমাবেশ করে যাচ্ছেন।
    জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ দুই নেতার বাকযুদ্ধ ১১ নভেম্বর থেকে এখন মাঠের যুদ্ধে নিয়ে যাচ্ছেন অনুসারীরা। তাই যেকোনো মুহুর্তে ঘটতে পারে বড় কোনো অঘটন এই আশংকা আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীদের।
    একজন সুনামগঞ্জ আওয়ামী লীগের দিকপাল অন্যজন টানা ৪বারের নির্বাচিত আওয়ামী এমপি।
    গণমাধ্যমে পাল্টাপাল্টি বক্তব্যের জেরে দুই নেতার অনুসারীরা পক্ষে বিপক্ষে মাঠে ও বাক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ছেন।
    আলোচিত দুই নেতা মুকুট-মানিক দ্বন্দ্বের কথা এখন সুনামগঞ্জের গণ্ডি পেরিয়ে মিডিয়ার কল্যাণে দেশ বিদেশে উত্তাপ ছড়াচ্ছে অনুসারী, শুভাকাঙ্ক্ষী ও আওয়ামী সসমর্থকদের মাঝে।
    সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নুরুল হুদা মুকুট মিডিয়াতে সুনামগঞ্জের মুকুটহীন সম্রাটের উপাদীতে ভূষিত সেই ৯৬ নব্বই দশকে।
    জেলার এমপি, মন্ত্রী সবাই একাট্টা হয়েও সুনামগঞ্জের আওয়ামী রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করতে পারেননি নুরুল হুদা মুকুটের তৃণমূলে ব্যাপক জনপ্রিয়তার জন্যে! বরং তিনি আওয়ামী পরিবারের তৃণমূল,ত্যাগী ও অত্যাচার নির্যাতনের শিকারদের আশ্রয়স্থল ও শান্তনার বটবৃক্ষ হয়ে আগলে রেখেছেন সুনামগঞ্জের নেতাকর্মীদের।
    সাম্প্রতিক সময়ে নুরুল হুদা মুকুটকে ইঙ্গিত করে সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও ৪ বারের নির্বাচিত এমপি মুহিবুর রহমান মানিক এর বক্তব্যকে কেন্দ্র করে এই বাক যুদ্ধ শুরু !
    মানিক ও তার অনুসারীদের বক্তব্য হলো- মুক্তিযোদ্ধা বজলুল মজিদ খসরুর ‘রক্তাক্ত একাত্তর সুনামগঞ্জ’ বইয়ে উল্লেখিত ‘৭২ সালে দালাল আইনে গ্রেপ্তার নুরুল হুদা মুকুটের পরিবারের একজনকে রাজাকার উল্লেখ করে এবং পচাঁত্তর সালে বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যার পর ঢাকা ও সুনামগঞ্জে মিষ্টি বিতরণকারী উল্লেখ করে স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী সংগঠন আওয়ামীলীগ থেকে বহিস্কারের দাবি জানাচ্ছেন মানিক ও তার অনুসারী নেতাকর্মীরা।
    জবাবে নুরুল হুদা মুকুট বলেন, মুহিবুর রহমান মানিক সুরঞ্জিত সেনের হাত ধরে আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশ করে এমপি হয়েছেন। এমপি হওয়ার আগে তিনি থানার চিহ্নিত দালাল ছিলেন। ১৯৯৯ সালের ১৫ মার্চ আওয়ামী লীগের নিবেদিতপ্রাণ নেতা কালাম চৌধুরী ও শামীম চৌধুরীকে মারার জন্য তার বাসায় যে বোমা বানিয়েছিলেন সেই বোমা বিস্ফোরিত হয়ে তার কর্মী বাবুল ও বোমা এক্সপার্ট আরিফ হায়দারের মৃত্যু হয়।
    গুরুতর আহত হন তার মামতো ভাই আবুল লেইছ। তিনি বলেন, সংসদ সদস্যের প্রভাব খাটিয়ে বিগত দিনগুলোয় মানিক কোটি কোটি টাকা অবৈধভাবে অর্জন করেছেন। তিনি কোটি কোটি টাকা লুটপাট করেছেন।
    তার ভাই মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে অবৈধ উপায়ে ১ কোটি ৭৮ হাজার ২৭৬ টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন মামলা করে আদালতে অভিযোগপত্র দায়ের করেছে।
    নিজের অপরাধ ঢাকতে ও আওয়ামী লীগে বিভেদ সৃষ্টি করে ফায়দা হাসিলের জন্য এমপি মানিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্য দিয়েছেন।
    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মুকুট অনুসারী একজন জেলা পরিষদের সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা বলেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুস সামাদ আযাদের হাতে গড়া নুরুল হুদা মুকুট সুনামগঞ্জে একজনই যিনি আওয়ামী লীগের দুর্দিনে সুদিনে বিরোধী দলের হাত থেকে যেমন নেতাকর্মীদের আগলে রেখেছেন তেমন আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারী হাইব্রিড লুটেরাদের হাত থেকেও তৃণমূল ত্যাগী নেতাকর্মীদের রক্ষা করছেন। রাজনৈতিক ভাবে মুকুট ভাইকে মোকাবেলা করতে ব্যার্থ হয়ে দুর্নীতিবাজরা এখন গ্রামে গঞ্জে কুৎসা রটনা করছে কিন্তু সুনামগঞ্জের মানুষ, তৃণমূল কর্মী বান্ধব নেতা আলহাজ্ব নুরুল হুদা মুকুট এর পক্ষে অতীতে ছিলো এখনো আছে, তাই বোমাবাজ নেতাদের কথায় কিছু যায়-আসেনা।

    আরও খবর

    Sponsered content