• রাজনীতি

    দুর্নীতিবাজ ও বিতর্কিত এমপি রতন সহ পরিকল্পনা মন্ত্রী দিরাই আসছেন আজ, সরকারের শুদ্ধি অভিযান প্রশ্নবিদ্ধ!

      প্রতিনিধি ২৮ নভেম্বর ২০১৯ , ১০:৫৭:৫১ অনলাইন সংস্করণ

    স্টাফ রিপোর্টারঃ-  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সূচিত দুর্নীতি ও ক্যাসিনো কাণ্ডে জড়িত (নিজ দল আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী) বিরুদ্ধে চলমান অভিযান দলীয় গণ্ডীর বাইরেও সর্ব সাধারণের কাছে প্রসংশিত হচ্ছে। সাংগঠনিক অনিয়ম, ক্যাসিনো ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় আত্মীয় স্বজনদের দলীয় পদপদবী থেকে যেখানে বাদ দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেখানে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী হয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রী এমএ মান্নান ক্যাসিনো কাণ্ডে জড়িত এবং শতশত কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের অভিযুক্ত চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ এমপি রতনকে নিয়ে সুনামগঞ্জের দিরাই আসছেন আজ।
    আয়োজকদের প্রচারপত্রে ও মিডিয়ার মাধ্যমে জানা যায় দিরাই উপজেলার বোয়ালিয়া বাজারে অবস্থিত বিবিয়ানা মডেল কলেজ আয়োজিত এক গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠান আজ শুক্রবার কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত হবে এতে প্রধান অতিথি ও সংবর্ধিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সুনামগঞ্জ-৩ আসনের সাংসদ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান। বিশেষ অতিথি হিসেবে দুর্নীতির বরপুত্র সুনামগঞ্জ-১ আসনের মোয়াজ্জেম হোসেন রতন এমপি উপস্থিত থাকবেন। এছাড়াও গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন, দিরাই-শাল্লা আসনের সংসদ সদস্য ড. জয়া সেনগুপ্ত। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সুনামগঞ্জ-৫ আসনের মুহিবুর রহমান মানিক এমপি, হবিগঞ্জ-২ আসনের আবদুল মজিদ খান এমপি, হবিগঞ্জ-১ আসনের গাজী মোহাম্মদ শানওয়াজ এমপি ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের শামীমা আক্তার খানম এমপি। সভাপতিত্বে করবেন দিরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সফি উল্লা।
    সম্প্রতি সুনামগঞ্জ জেলায় আওয়ামী লীগের ১২ ইউনিটের সম্মেলন স্থগিত হওয়ার পিছনেও এই বিতর্কিত এমপি রতন ও তাকে সহযোগিতা করেছেন মন্ত্রী এমএ মান্নান!
    জেলা সভাপতি আলহাজ্ব মতিউর রহমান এমপি রতন কে নিয়ে বৈঠকে বসতে অসম্মতি জানালে মন্ত্রী এমএ মান্নান রতনকে রাখতে দায়িত্ব প্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে সুপারিশ করেন।
    অথচ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমান ইতিপুর্বে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্ধকে জানিয়েছেন, ‘দুদকের অনুসন্ধান ও তদন্ত সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত এমপি রতনের উপস্থিতিতে কোনো বৈঠকে অংশ গ্রহন করবেন না।
    জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বৈঠকে অংশ গ্রহনে আপত্তির কারণ জানতে চাইলে জেলার দায়িত্বশীল নেতারা বলেন, ‘এমপি রতনের বিরুদ্ধে ক্যাসিনো ব্যবসায় জড়িত থাকাসহ নানা দুর্নীতির অভিযোগ উঠায় দুদক তার বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তার ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়েছে।
    তার অঢেল সম্পদ নিয়ে নানামুখী প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। দুদকের তদন্ত সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত এমপি রতনের উপস্থিতি বা অংশগ্রহণে যে কোনো ধরনের বৈঠক প্রশ্নবিদ্ধ হবে। তাই জেলা সভাপতি আপত্তি জানিয়েছিলেন।
    এ বিষয়ে জানতে সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সাবেক এমপি আলহাজ্ব মতিউর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,বিতর্কিত এমপি রতন বৈঠকে থাকলে আমি সেই বৈঠকে যাব না, যা আগেই জানিয়েছি। দলের ভাবমূর্তি রক্ষায় আমি আমার সিদ্ধান্তে অটল আছি।
    তিনি আরো বলেন, জাতির জনকের কন্যা দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চলমান শুদ্ধি অভিযানকে প্রশ্নবিদ্ধ না করতে প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রীয় আইনের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ রেখেই ‘দুদকে’ অভিযুক্ত এমপি রতন’ চা-চক্রে উপস্থিত থাকায় আমি মঙ্গলবার সেখানেও অংশ গ্রহন করিনি।
    জেলা সভাপতি আলহাজ্ব মতিউর রহমানের এমন মনোভাব ও সিদ্ধান্তের কারণে যেখানে তৃণমূল পর্যায়ে প্রসংশনীয় হচ্ছে সেখানে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী হয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রী এমএ মান্নান নিন্দিত হতে চলেছেন!
    নিজে সজ্জন হয়ে দুদকের অভিযুক্ত চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ এমপি রতনকে তদন্ত কাজ চলাকালীন সময়ে একজন মন্ত্রী কিভাবে একসাথে একমঞ্চে কর্মসূচি পালন করতে পারেন?
    সুনামগঞ্জ জেলায় আওয়ামী লীগের দলীয় টিকিটে ৪ এমপির মধ্যে রতন, জয়া ও মন্ত্রী মান্নান এমপি হওয়ার পূর্বে রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন না! শুধুমাত্র মহিবুর রহমান মানিক এমপি রাজনীতিবিদ হলেও ৯৬সালের নির্বাচনের আগে সুরঞ্জিত সেন গুপ্তের হাতধরে গনতন্ত্রী পার্টি থেকে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। আওয়ামী লীগে যোগদানের মাত্র ৩ বছরের মাথায় ১৯৯৯ সালে আওয়ামী লীগের নিবেদিত প্রাণ দুই নেতাদ্ব্য ছাতক পৌর সভার বর্তমান মেয়র কালাম চৌধুরী ও শামীম চৌধুরী কে হত্যার উদ্দেশ্যে নিজ বাসায় বোমা তৈরি করতে গিয়ে বোমা এক্সপার্ট ও মানিক অনুসারী ক্যাডার সহ দুইজন নিহত এবং উনার মামাতো ভাই শাল্লার আবুল্লেইছ চৌধুরী গুরুতর আহত হোন, উনার বোমার আঘাতের চিহ্ন আজও মুখ সহ শরীরের বিভিন্ন অংশে বিদ্যমান রয়েছে।
    তারপর থেকে দেশ ব্যাপী এমপি মানিক বোমা মানিক হিসাবে খ্যাতি পান যা আজও জনসাধারণের মুখে মুখে শুনতে পাওয়া যায়!
    তাই মন্ত্রী সহ ৪ এমপি জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্ব সহ স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের পাশ কাটিয়ে নিজস্ব বলয় তৈরি করে পথ চলছেন বিতর্কিত ভাবে।
    এখন গুঞ্জন শুরু হয়েছে তাহলে কি এমপি মান্নান রতন-মানিক থেকে আলাদা কেউ নয়- উনিও সেই একি রসুনের কড়া!

    আরও খবর

    Sponsered content